
অনেকেই বলেন, 'বেতন এত কম, সঞ্চয় করব কীভাবে?', আবার কেউ ভাবেন, বেতন বাড়লেই বিনিয়োগ শুরু করবেন। বাস্তবে এই ভাবনাই বছরের পর বছর বিনিয়োগ পিছিয়ে দেওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ। অথচ সত্যিটা হলো, বেতন কত, তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আপনি সেই বেতন কীভাবে ব্যবহার করছেন।
২০২৫ শেষের পথে। আপনি যদি ২০২৬ সালের মধ্যে নিজের আর্থিক অবস্থায় বাস্তব পরিবর্তন দেখতে চান, তবে নতুন বছর থেকেই এই অভ্যাসটি গড়ে তুলুন, নিয়মিত বিনিয়োগ।
কম বেতনে কি সত্যিই সঞ্চয় সম্ভব?
অবশ্যই সম্ভব। ধরুন, কারও মাসিক আয় ৪০,০০০-৫০,০০০। এই আয়ে হয়তো মাসে ২০,০০০ সঞ্চয় করা কঠিন, কিন্তু বেতনের ১০% অর্থাৎ ৪,০০০-৫,০০০ আলাদা করা একেবারেই অসম্ভব নয়। সামান্য খরচ নিয়ন্ত্রণ করলেই তা করা যায়।
এই টাকাটা যদি প্রতি মাসে SIP (Systematic Investment Plan)-এর মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা হয় এবং গড়ে ১৫% বার্ষিক রিটার্ন ধরা হয়, তাহলে-
৫ বছরে কর্পাস দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪.৩৬ লক্ষ
৮ বছরে তা বেড়ে হতে পারে প্রায় ৮.৮৯ লক্ষ
১০ বছরে পৌঁছতে পারে প্রায় ১৩ লক্ষ
বেতন বাড়লে, বিনিয়োগও বাড়ান
বেতনভোগী কর্মীদের ক্ষেত্রে সাধারণত ৬-৭ বছরে বেতন প্রায় দ্বিগুণ হয়। যদি কারও শুরুতে বেতন ৪০,০০০-৫০,০০০ হয় এবং বছরে গড়ে ১০% হারে বাড়ে, তাহলে ১০ বছর পর সেই বেতন ১ লক্ষ টাকার গণ্ডি ছাড়াতে পারে।
এই সময়টায় যদি প্রতি মাসে বিনিয়োগের অঙ্কও ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়, তাহলে ফলাফল আরও চমকপ্রদ হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বেতনের অন্তত ২০% বিনিয়োগ করা উচিত। অর্থাৎ ₹৫০,০০০ আয়ের ক্ষেত্রে মাসে ১০,০০০ SIP।
এই অঙ্কে ১০ বছরে কর্পাস হতে পারে প্রায় ৩৯.৫ লক্ষ
২০ বছরে, একই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে, মোট তহবিল পৌঁছতে পারে প্রায় ২.৭৮ কোটি টাকায়
কোটিপতি হওয়ার আসল চাবিকাঠি
কোটিপতি হওয়ার জন্য এককালীন বড় অঙ্কের টাকা দরকার নেই। দরকার নিয়মিত বিনিয়োগ
দীর্ঘমেয়াদি ধৈর্য
বেতন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগ বাড়ানোর অভ্যাস
মিউচুয়াল ফান্ডের পাশাপাশি চাইলে ETF, PPF, শেয়ার বাজার বা স্বল্পমেয়াদি তহবিলেও বিনিয়োগ ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।
তবে মনে রাখবেন, বিনিয়োগের আগে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেওয়া এবং প্রয়োজনে একজন আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।