সোনা ও রুপোর দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। গত তিন দিনে সোনার দাম ৬,০০০ টাকা লাফিয়ে বেড়েছে। দীপাবলির আগেই সোনার দাম ১.২৫ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এবার রুপোও নতুন রেকর্ড গড়ল। বৃহস্পতিবার ৬,০০০ টাকা বেড়ে রুপোর দাম কেজি প্রতি ১,৬৩,০০০ টাকায় পৌঁছেছে।
চলতি বছরে রুপোর দাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা বিশ্ব জুড়ে ক্রমবর্ধমান শিল্পের চাহিদা এবং সরবরাহ ক্রমাগত হ্রাস পাওয়াই এর অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার মধ্যে, বিশ্ব বাজারে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে রুপোর কেনাকাটা বেড়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এটি দ্বিতীয়বার, যখন রুপোর দামে তীব্র বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ৬ অক্টোবর, এটি ৭,৪০০ টাকা বেড়ে ১,৫৭,৪০০ টাকা প্রতি কেজিতে পৌঁছেছিল।
রুপোর দামে নতুন মাইলফলক
ভারতের বাজারে রুপোর দামে নতুন ইতিহাস রচিত হয়েছে। সম্প্রতি প্রতি কেজি রুপোর দাম দেড় লক্ষ টাকার গণ্ডি ছাড়িয়ে রেকর্ড গড়েছে। কলকাতা শহরে রুপোর খুচরো দাম প্রতি কেজিতে ১,৬৭,০০০ টাকায় পৌঁছেছে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহেই রুপোর দাম ১,৫০,০০০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রুপোর দাম ধারাবাহিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী, যা আর্থিক বাজারে নতুন প্রবণতা তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উত্থান কেবল স্বল্পমেয়াদি নয়, বরং এটি বিশ্ব অর্থনীতিতে চলমান অস্থিরতা ও কাঠামোগত পরিবর্তনের ফল।
কেন বাড়ছে রুপোর দাম?
রুপোর এই আকাশছোঁয়া দামের পেছনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক— দুই বাজারেই একাধিক কারণ কাজ করছে।সবচেয়ে বড় কারণ হলো বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা। আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য শুল্ক যুদ্ধ, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি, এবং মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা— সবই বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে। ডলারের দুর্বলতা এবং মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা বিনিয়োগকারীদের সোনা ও রুপোর মতো নিরাপদ সম্পদে বিনিয়োগে উৎসাহিত করছে। এছাড়া, শিল্পক্ষেত্রেও রুপোর চাহিদা দ্রুত বাড়ছে— বিশেষ করে সৌর প্যানেল, বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি, সেমিকন্ডাক্টর চিপ, তার এবং ৫জি প্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রে রুপোর ব্যবহার এখন অপরিহার্য। বর্তমানে বিশ্বের মোট রুপোর চাহিদার অর্ধেকেরও বেশি আসে শিল্প খাত থেকে, যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সরবরাহের দিক থেকেও বাজারে চাপ দেখা দিয়েছে। গত পাঁচ বছর ধরে রুপোর সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে— চাহিদা সরবরাহের চেয়ে প্রায় ১৪৯ মিলিয়ন আউন্স বেশি। ফলে দামে আগুন লেগেছে।