হাতে আর মাত্র ২ দিন। তার মধ্যেই জমা করতে হবে ITR। তবে এর মাঝেই নানাপ্রকার বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফলে করদাতাদের সতর্ক করা হচ্ছে, তারা যাতে কোনও ভাবেই অনলাইনে প্রচারিত বিভ্রান্তিকর পরামর্শের ফাঁদে পা না দেন। সম্প্রতি রটে গিয়েছে, ১২ লক্ষ টাকার নীচে বার্ষিক রোজগার হলে ITR ফাইল করতে হবে না। এমনটা ভাবা সম্পূর্ণ ভুল।
সার্টিফায়েড ফিন্যান্সিয়াল প্ল্যানার এবং বিশেষজ্ঞ ঋতেশ সবরওয়াল সম্প্রতি লিঙ্কডইন পোস্টে বিষয়টিকে 'বিপজ্জনক ভুল' বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, '১২ লক্ষ টাকার নীচে বার্ষিক রোজগার অব্যাহতি নয়। এটি একটি রিবেট। এই রিবেট ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ থেকে প্রযোজ্য হবে। বর্তমান অর্থবর্ষের জন্য রিবেটের সীমা ৭ লক্ষ টাকা। আপনার আয় যদি ৩ লক্ষ টাকার বেশি হয় তবে রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক।'
২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ অর্থাৎ এপ্রিল ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫-এর মধ্যে যাদের আয় ৩ লক্ষ টাকার বেশি, তাদের সকলকেই ITR জমা করতে হবে। ১৫ সেপ্টেম্বরের ডেডলাইন মিস করলে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা গিতে হবে। ফলে অযথা মানসিক চাপ এবং আয়কর বিভাগের নোটিশ পাওয়ার ঝুঁকি থেকে বাঁচতে অবিলম্বে সতর্ক হন এবং ITR ফাইল করুন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০২৫ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘোষিত কর সংস্কারে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের জন্য রিবেট দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। তবে সেটি এই অর্থবর্ষ নয়, পরবর্তী অর্থবর্ষ (২০২৫-২৬) থেকে কার্যকর হবে। অনেক করদাতা ভেবেছেন, এটি ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়ে গিয়েছে। ফলে অনলাইনে দাবি করা বিভ্রান্তিকর তথ্য, ১২ লক্ষ টাকার নীচে আয় হলে ITR দাখিল করার দরকার নেই দেখে আর ITR জমা করেননি।
ঋতেশ সরবরওয়াল করদাতাদের অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে পরামর্শ দিয়েছেন। ফর্ম ১৬, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট এবং অন্যান্য আয়ের প্রমাণপত্র সংগ্রহ করতে আয়কর দফতরের পোর্টালে অবিলম্বে রিটার্ন জমা দিতে এবং প্রয়োজন হলে একজন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের পরামর্শ দিতে বলেছেন দিতি। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, 'কর দফতর, আপনি জানতেন না, সেই অজুহাত কিন্তু গ্রহণ করবে না।'
বিশেষজ্ঞরা আরও উল্লেখ করেছেন, সময়মতো ITR জমা করলে শুধু জরিমানা এড়ানো যায় তা-ই নয়, ভবিষ্যতে ঋণ, ক্রেডিট কার্ড অনুমোদন বা সরকারি সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও এটি জরুরি হবে। এগুলির জন্য প্রায়ই কর দাখিলের প্রমাণ লাগে।
আপনার বার্ষিক আয় ১২ লক্ষ টাকার নীচে হলেও সময়মতো ITR দাখিল করলে জরিমানা, অপ্রয়োজনীয় ঝঞ্ঝাট এড়ানো যাবে। এতে আর্থিক রেকর্ড স্বচ্ছ থাকে।