বিশ্বের প্রথম মডিফায়েড বডিবিল্ডার। অবাক হলেন? তবে এটাই বাস্তব। করণ সিধু নামে দিল্লির এক যুবক দেহের সমস্ত অংশে ট্যাটু করিয়েছেন। তার সঙ্গে দেহে করা হয়েছে বেশকিছু অস্ত্রোপচারও। এভাবেই নিজেকে মডিফায়েড বডি বিল্ডার তৈরি করেছেন তিনি। ট্যাটুর কারণে তিনি 'ট্যাটুগ্রাফর করণ' নামেও পরিচিত।
দেহের কোনও এমন অংশ নেই যেখানে ট্যাটু করাননি করণ। এমনকী চোখেও করিয়েছেন ট্যাটু। আর শুধু তাই নয়, কান এবং জ্বিভায় অস্ত্রোপচার করিয়েছেন তিনি। নিজের সমস্ত দাঁত বদলে ধাতুর দাঁতও লাগিয়েছেন করণ।
ট্যাটুগ্রাফর করণ ১৬ বছর বয়সে প্রথম ট্যাটু করান। তারপর থেকে ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন ট্যাটু আর্টিস্ট। পাশাপাশি নিজের শরীরেও করতে থাকেন ট্যাটু। এছাড়া বডি বিল্ডিং-ও করেন তিনি।
বিষয়টি অসম্ভব মনে হলেও এটাই সত্যি। একদিকে ট্যাটু করার পর বিশ্রাম অন্যদিকে আবার বডি বিল্ডিং-এর জন্য পরিশ্রম, দুটোই একইসঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন করণ।
এই বিষয়ে করণ জানাচ্ছেন, বেশকয়েকবার ট্যাটু করার সময় প্রায় জ্ঞান হারিয়েছিলেন তিনি। এমনকী কয়েকটি অস্ত্রোপচারের সময় প্রাণের ঝুঁকিও দেখা দিয়েছিল।
তবে প্রাণের ঝুঁকি থাকলেও নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য সেই সমস্ত বাধা তিনি অতিক্রম করেছেন বলেই জানান করণ।
করণই হলেন ভারতের প্রথম ব্যক্তি যিনি চোখে ট্যাটু করিয়েছেন। এর জন্য নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে অস্ট্রেলিয়ান এক ডিজাইনার তাঁর চোখে ট্যাটু করেন।
করণের কাছে বডি বিল্ডিং ও ট্যাটু তাঁর কাছে তপস্যার মতো। আর নিজের এই দুই শখ পূরণের জন্য অনেকবার প্রাণের ঝুঁকিও নিতে হয়েছে তাঁকে।
এই কাজে অবশ্য করণের পাশে থেকেছেন তাঁর বাবা-মা। করণের বাবা নিজের শরীরে বেশকিছু ট্যাটু করিয়েছেন। তিনি একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার। করণের বাবা জানাচ্ছেন, যখন তাঁর চোখে ট্যাটু করা হচ্ছিল সেই সময় দৃষ্টিশক্তি হারানর আশঙ্কা ছিল। তবে ছেলের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে গেলে নিজের চোখ তাঁকে দিয়ে দিতেন বলে জানান করণের বাবা।
অন্যদিকে করণের মা জানাচ্ছেন, ট্যাটু তৈরির সময় ছেলের যন্ত্রণা দেখে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়তেন, তবে ছেলের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় এখন তিনি খুশি। পরিবারের আশীর্বাদ সবসময় করণের সঙ্গে থাকবে বলেও জানান তিনি।
ইতিমধ্যেই নিজের এক সতন্ত্র পরিচয় তৈরি করেছেন করণ। শুধু দেশেই নয়, গোটা বিশ্বে তাঁর বহু ফ্যান রয়েছেন। বর্তমানে নিজের নাম করণ সিধু থেকে বদলে ট্যাটুগ্রাফর করণ রেখেছেন তিনি। এমনকী আধার কার্ডেও তাঁর এই নামই রয়েছে।
মাত্র ১৯ বছর বয়সেই অপরের দেহে ট্যাটু বানিয়ে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুলেছেন করণ। নিজের শখের মধ্যে দিয়ে শুধু দিল্লি নয় গোটা দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন তিনি।