একেই বোধহয় বলে উত্তরণ। সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি থেকে কেরিয়ার শুরু। ছিল না কোনও প্রথাগত ডিগ্রি। তবে আত্মবিশ্বাস, কঠোর পরিশ্রম আর শেখার ইচ্ছের উপর বাজি ধরে সেই সংস্থারই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে করছেন কাজ।
আর এই অকল্পনীয় ঘটনাটি ঘটেছে Zoho-তে। এক সময় এই সংস্থায় সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে কর্মরত আব্দুল আলিম এখন সেখানই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। আর তাঁর সেই জার্নিই আজ ভাইরাল লিঙ্কডইনে।
নির্জের জার্নি জানিয়ে একটি পোস্ট করেন আলিম। সেই পোস্ট থেকে জানা যায়, মাত্র ১ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল আলিমকে। তার মধ্যে ৮০০ টাকা আবার খরচ হয়ে গিয়েছিল ট্রেন টিকিটে। কোথাও যাওয়ার ছিল না জায়গা। ফলস্বরূপ তাকে সেই রাস্তাতেই কাটাতে হয় দিন। তারপর সিকিউরিটি গার্ডের কাজ মেলে জোহো-তে।
এই সময় তাঁর ১২ ঘণ্টার শিফট চলত। কাজের বাইরে পাওয়া যেতে না সময়।
যদিও সেই সময় তাঁর পরিচয় হয় জোহোর সিনিয়র কর্মী শিবু অ্যালেক্সিসের সঙ্গে। সেই কথপোকথনে আলিম বলেন, 'আমি ক্লাস ১০ পর্যন্ত পড়েছি, কিছুটা HTML জানি। আমি আরও কিছু জানতে চাই।'
এর পর অ্যালেক্সিস তাঁর মেন্টরশিপ শুরু করেন। পরবর্তী ৮ মাস ধরে চলে ট্রেনিং। এই সময় সারাদিন কাজ করার পর শিফট শেষ হলে চলত পড়াশোনা। আলিম প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতেন। আর এই সময়ই তিনি এমন একটি অ্যাপ তৈরি করেন, যেটি ইউজারের আউটপুটকে ভিজ্যুয়ালাইজ করতে পারত। এই অ্যাপটিই জোহোর ম্যানেজারকে দেখিয়েছিল অ্যালেক্সিস। সেটা দেখে খুব ভালো লাগে ম্যানেজারের। তারপর আব্দুলকে একটা ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়। সেই সময় তাঁকে বলা হয়, 'Zoho তে কলেজের ডিগ্রির প্রয়োজন নেই। স্কিল থাকাটাই জুরুরি।' এর পর আলিম সেই ইন্টারভিউ ক্র্যাক করেন এবং সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসাবে শুরু করেন কাজ।
আজ তিনি ৮ বছর সেখানে কর্মরত। তিনি এখন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবেই করছেন কাজ। আর তাঁর এই উত্তরণ সত্যিই এক নতুন নজির তুলে ধরে। সকলেই তাঁর এই এগিয়ে যাওয়া দেখে অবাক।
কিছু কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার আবার এই উত্তরণকে উদাহরণ হিসাবে দেখছেন। তাঁদের মতে, শুধু ডিগ্রি থাকলে কিছু হবে না। বরং থাকতে হবে স্কিল। তাহলেই সব বাধা পেরিয়ে নিজের জায়গা তৈরি করা সম্ভব। কোনও বাধাই আর থাকবে না।