
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এক বিয়ের ভিডিও। যেখানে ন্যাড়া মাথায় নববধূ বিয়ের লহেঙ্গা ও গা-ভর্তি গয়না পরে হেঁটে আসছেন হবু বরের দিকে। নববধূর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছেন হবু বর। এই ভিডিওটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হল নববধূর মাথায় একটিও চুল নেই। তবে তা নিয়ে একদম চিন্তিত ছিলেন না নববধূ। বরং খুব সাহসের সঙ্গে তিনি মাঙ্গটিকা বা টিকলি পরেছিলেন। ভাইরাল এই বিয়ের কনেকে দেখে তাক লেগে যাওয়ার জোগাড়। আমেরিকাবাসী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ফ্যাশন-প্রভাবী নীহার সচদেবের এই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ঠিকই, তবে তার নেপথ্যে ছিল না ভুয়ো ‘কনটেন্ট’।
মহিলাদের সুন্দর দেখার ক্ষেত্রে তাঁদের চুলের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চুন ঘন ও কালো করার জন্য অনেক মহিলাই অনেক কিছু করে থাকেন। আর যদি বিয়ের কথা হয় তাহলে তো প্রতিটি অনুষ্ঠানেই চুলের আলাদা আলাদা স্টাইল করে থাকেন তাঁরা। তবে সেই পথে হাঁটেননি আমেরিকার বাসিন্দা ও ইনফ্লুয়েন্সার নীহীর সচদেব। তাঁর বিয়ের লুকস দেখে সোশ্যাল মিডিয়া রীতিমতো অবাক। বিয়ের লহেঙ্গায় তাঁকে অপরূপ সুন্দর লাগছে।
নীহার জানিয়েছেন, তিনি বহুদিন ধরেই অ্যালোপেশিয়া নামক একটি রোগে আক্রান্ত। ৬ বছর বয়সে তিনি জানতে পারেন যে তিনি এই রোগে আক্রান্ত। এই রোগে মাথার সব চুল পড়ে যায়। রোগ নিরাময়ে নানা রকম চিকিৎসাও করিয়েছেন তিনি। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। উল্টে মাথার নির্দিষ্ট অংশ থেকে শুরু হওয়া অ্যালপেশিয়া ধীরে ধীরে গোটা মাথায় ছেয়ে গেছে। নিজের এই পরিণতি দেখে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন নীহার। অনেকেই পরামর্শ দিয়েছেন বিয়ের দিন মুখের সঙ্গে মানানসই পরচুলা বা ‘উইগ’ পরার।
কিন্তু নীহার সেটা না করেই একেবারে অন্যভাবে নিজের বিয়ের লুকস সকলের সঙ্গে শেয়ার করে নেন। তিনি নিজের ন্যাড়া মাথাকে পরচুলা বা উইগের নীচে লোকাতে চাননি। বরং সকলের সামনে নিয়ে এসতে চেয়েছিলেন। নীহার ইনস্টাগ্রামে যে ছবি পোস্ট করেছেন সেখানে তিনি পরেছিলেন সোনালি ও সাদা এমব্রয়ডারি ও সবুজ রঙের পাথর বসানো লাল লহেঙ্গায়। নীহার এই লহেঙ্গার সঙ্গে সাদা ওড়না নিয়েছিলেন, যেটা তাঁর কাঁধে ছিল এবং মাথায় উড়িয়েছিলেন লাল রঙের ওড়না। সোনার গয়না পরেছিলেন নীহার। দীর্ঘ দিনের বন্ধুকে জীবনসঙ্গী হিসাবে গ্রহণ করার আগে তিনি কৃত্রিমতার আশ্রয় নিতে চাননি। নীহার আসলে যেমন, তেমন ভাবেই বিয়ের দিন মণ্ডপে হাজির হয়েছিলেন।
বিয়ের দিন নীহারের এই গ্র্যান্ড এন্ট্রি রীতিমতো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সকলেই নববধূর এই রূপের প্রশংসা করেছেন। বিয়ের প্রচলিত ধ্যানধারণা ভেঙে দেওয়ার এই পদক্ষেপকে ‘সুন্দর এবং সাহসী’ বলে মনে করছেন নেটাগরিকদের একাংশ।