scorecardresearch
 

Odisha Train Accident Love Poems:'কী করে তোকে ভুলবে এই মন...' ব্যাগ-দেহ-রক্ত-চটির মধ্যে বালেশ্বরে মিলল প্রেমের কবিতা

করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ক্ষতিগ্রস্ত কোচের পাশের ট্র্যাকে একটি নোটবুক পাওয়া গেছে। ডায়েরিতে বাংলা ভাষায় কবিতা লেখা আছে। এর সঙ্গে অনেক স্কেচও তৈরি করা হয়েছিল এবং পাতাগুলিতে বিভিন্ন গল্প লেখা রয়েছে।

Advertisement

ওড়িশার বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার তিন দিন হয়ে গেছে, উদ্ধারকাজ শেষ হওয়ার পর এখন ট্রেন চলাচলও শুরু হয়েছে ট্র্যাকে। দুর্ঘটনায় ২৭৭ জন মারা গেলেও অনেক  এখনও হাসপাতালে চিকিৎসারত রয়েছেন। এই দুর্ঘটনায় প্রচুর মানুষ তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে, আবার অনেক মানুষ আছেন যারা এখনও তাদের প্রিয়জনের জন্য অপেক্ষা করছেন। ট্রেনে সফরে থাকা যাত্রীদের নানা  গল্পও সামনে আসছে। এত কিছুর মাঝে যে জায়গায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেখানে রেললাইনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নোটবুকের পাতা পাওয়া গেছে, যেগুলোর ওপর বাংলা ভাষায় ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

 

 

আরও পড়ুন

নোটবুকের ওই পাতায় হাতে লেখা ভালোবাসার কবিতা পাওয়া গিয়েছে । বাংলা ভাষায় লেখা একটি কবিতা - ‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালবাসা সৃষ্টি হয়....’’ আর সেইসঙ্গে হাতি, মাছ আর সূর্যের আঁকা ডায়েরির ছেঁড়া পাতায। এগুলি  হয়তো ট্রেনে ভ্রমণের সময় কোনো যাত্রী লিখেছে। তবে এই যাত্রীর পরিচয় এখনো জানা যায়নি। বাংলা ভাষায় লেখা   কবিতার কিছু অংশ যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে,

‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, 
ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালবাসা সৃষ্টি হয়....’’

 

 

আরেকটি কবিতায় লেখা....

'ভালোবেসে এই মন
তোকে চায় সারাক্ষণ
আছিস তুই মনের মাঝে 
পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে
কি করে তোকে
ভুলবে এই মন
তুই যে আমার জীবন'

আরও লেখা রয়েছে 'ভালবাসা দিয়ে তাকে চাই সর্বদা আছো তুমি আমার মনের সঙ্গে'। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই ছবি। এগুলি দেখে মন খারাপ নেটিজেনদের। অনেকেই বলেছে জীবন বড়ই নিষ্ঠুর। এই কবিতাগুলো পড়ে মানুষ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে এবং একজন লিখেছেন, 'কতটা হৃদয় বিদারক.. এটা দেখায় জীবন কতটা অপ্রত্যাশিত ছিল।' স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এখন পর্যন্ত কেউ এসব কবিতা বা নোটবুক দাবি করতে এগিয়ে আসেনি। লেখকের কি হয়েছে? এ তথ্যও পাওয়া যায়নি। তাই প্রেমের কবিতার খাতাও তার মালিকের মত অজানা ভাগ্যের অপেক্ষায় প্রহর গুণছে। 

Advertisement

দুর্ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছিল? 
রেলওয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রেন নম্বর 12481 করমন্ডল এক্সপ্রেসটি বাহানাগা বাজার স্টেশনের (শালিমার-মাদ্রাজ) প্রধান লাইন দিয়ে যাচ্ছিল, একই সময়ে এটি লাইনচ্যুত হয় এবং আপ লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পণ্যবাহী  ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ট্রেনটি পূর্ণ গতিতে চলছিল, যার ফলে ২১টি বগি লাইনচ্যুত এবং ৩টি বগি লাইনের নীচে চলে যায়। 

ওড়িশায় ট্রিপল ট্রেন দুর্ঘটনা দেশ ও বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ২৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় ১১০০ জন। সিগন্যালের ত্রুটিই দুর্ঘটনার কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রেলওয়ের তদন্ত চলছে। এই ট্রেনগুলির  চালক ও রক্ষীদের সম্পর্কে জানার কৌতুহল রয়েছে সকলের মধ্যেই। দুটি ট্রেনের লোকো পাইলট (চালক) এবং গার্ড আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য ওড়িশার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে, দুর্ঘটনায় অল্পের জন্য বেঁচে যান  মালবাহী ট্পেনের ইঞ্জিন চালক এবং  গার্ড।

দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের খড়গপুর বিভাগের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার রাজেশ কুমার জানিয়েছেন, বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসের চালক ও গার্ডসহ করমন্ডল এক্সপ্রেসের লোকো পাইলট, সহকারী লোকো পাইলট এবং গার্ড আহতদের তালিকায় ছিলেন। আহতদের সবাইকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 ড্রাইভার দ্বারা প্রদত্ত তথ্য
তিনটি ট্রেন একে অপরের সঙ্গে  ধাক্কা খাওয়ার ঘটনায়  আরেকটি বড় তথ্য দিয়েছে রেলওয়ে বোর্ড। চালকদের বরাত দিয়ে বোর্ড জানিয়েছে, সিগন্যালে ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। 

সিগন্যালে সমস্যা
 করমন্ডল এক্সপ্রেসের চালক জানান, সবুজ সংকেত দেখেই তিনি সামনের পথ ঠিক করেছিলেন। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার আগে একটি অদ্ভুত শব্দ শুনেছিলেন বলে দাবি করেছেন যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের চালক। করোমন্ডল ট্রেন এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement