দ্রুতগামী বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কা থেকে বাঁদরদের প্রাণ বাঁচাতে পরীক্ষামূলক ভাবে বক্সা টাইগার রিজার্ভে রাস্তা পারাপার করতে ঝুলন্ত ব্রিজ তৈরি করলো বক্সা টাইগার রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ।
আপাতত, বক্সা টাইগার রিজার্ভের রাজাভাতখাওয়া থেকে শুরু করে জয়ন্তী পর্যন্ত মোট তিনটি এই ধরনের ঝুলন্ত ব্রিজ তৈরি করেছে বক্সা টাইগার রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ।
জয়ন্তী ও বক্সার জঙ্গলের রাস্তায় বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলাচল করে। পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জয়ন্তী এবং বক্সার রাস্তায় দ্রুতগামী ছোট গাড়ির চালকরা মদ্যপ অবস্থায় এই পথে গাড়ি চালিয়ে থাকে।
এই দ্রুতগামী ছোট গাড়ির চালকদের নিয়ন্ত্রণে কোনও ভূমিকা নেই পুলিশ এবং বনদপ্তরের। কার্যত বিনা বাধায় জঙ্গলের এই পথে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলাচল করে। ফলে হামেশাই এই ছোট গাড়ির গুলোর সাথে বন্য প্রাণীদের সংঘর্ষ লেগেই থাকে।
অন্যদিকে বেপরোয়া এই গাড়িগুলো নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলেও পড়ে ৷ গত বছর ৩১শে ডিসেম্বর বাইসনের সাথে একটি দু'চাকার মোটর সাইকেলের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক যুবকের। এ ছাড়াও বছর পাঁচেক আগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি চার চাকার ছোট গাড়ি জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। সাথে সাথেই গাড়িতে আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলে তিন যুবকের মৃত্যু হয়।
এই বেপরোয়া গাড়িগুলোর ধাক্কায় প্রায় প্রতিদিনই বক্সার জঙ্গলের রাস্তায় অন্যান্য বন্যপ্রাণীর পাশাপাশি বাঁদরের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে। বক্সার জঙ্গলে চলাচলকারি গাড়িগুলো থেকে বাঁদরদের জন্য খাবার ছুড়ে দেয় গাড়ির যাত্রীরা।
এই খাবারের লোভে বাঁদরের দল রাস্তায় চলে আসে। এর ফলে হামেশাই দ্রুতগামী ছোট গাড়িগুলোর ধাক্কায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বক্সার বাঁদরের দল।
বক্সা টাইগার রিজার্ভের এফডি বুদ্ধরাজ শেওয়া জানিয়েছেন দ্রুতগামী গাড়ি নিয়ন্ত্রনের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বন দপ্তরের তিনটি বিশেষ দল সারাক্ষণ গাড়িতে করে নজরদারি করবে। দ্রুতগামী গাড়ি ধরলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি দ্রুতগামী গাড়িগুলোর তাণ্ডব থেকে বাঁদরের পাল রক্ষা করতে পরীক্ষামূলক ভাবে গাছের উপর বেশ কিছু ঝুলন্ত ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে।