রাজ্য সরকারের লক্ষী ভান্ডার প্রকল্প রাভাদের কাছে পৌঁছে দিলেন মহকুমাশাসক। পাকা রাস্তার শেষে গ্রামের মেঠো এই প্রথম রাভাবস্তিতে প্রবেশ করলেন আলিপুরদুয়ার মহকুমা শাসক। মেন্দাবাড়ির রাভা বস্তির মেঠো পথে ধুলো উড়িয়ে দুধ সাদা একটি বিলাসবহুল গাড়ি তাদের এলাকায় ঢুকে পড়েছে দেখে কৌতুহল জেগে উঠেছে রাভা বস্তির আট থেকে আশি সকলের।
কারণ এর আগেও আধিকারিকরা এসেছেন কিন্তু ওই পাকা রাস্তা পর্যন্ত। পাকা রাস্তার শেষেও মেঠো পথের ধারেও গরীব রাভা জন জাতির মানুষেরা থাকেন। আর এই মেঠো পথে প্রশাসনের গাড়ি দেখেই কৌতুহল হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা কালচিনি ব্লকের উত্তর মেন্দাবাড়ি এলাকার রাভা জনজাতির মানুষদের।
গাড়ি থেকে এক ভদ্রলোক নামলেন। সঙ্গে নামল পুলিশি পোশাকে এক জন নিরাপত্তা রক্ষীও। পিছিয়ে থাকলেও বয়সের অভিজ্ঞতা অনেক কিছু শিখিয়েছে নরেন রাভাকে। তাই বুঝে গেছেন ইনি কোনও প্রশাসনিক কর্তা। একেবারে সাদামাটা ঢঙে হাত জোর করে কুশল বিনিময় করতেই প্রশাসনিক কর্তাকে কোথায় বসতে দেবেন তাই নিয়ে রীতি মতো চাপে পড়ে গেছেন নরেনবাবু।
তবে সেই চাপ মুক্ত করেছেন মহকুমা শাসক নিজেই। এবেবারে বারান্দায় কংক্রিটের মেঝের ওপরেই বসে পড়েছেন মহকুমা শাসক বিপ্লব সরকার। তার পর নরেন রাভা আর তার স্ত্রী সুখী রাভার সাথে আলাপ করেছেন। শুধু নরেন নয় শনিবার রাভা বস্তির বাড়ি বাড়ি ঘুরে তপশিলি উপজাতির এই রাভা সম্প্রদায়ের মানুষদের খোজ খবর নিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক বিপ্লব সরকার।
তারা কি কি সরকারি সুযোগ সুবিধে পাচ্ছেন তা যেমন খোজ নিয়েছেন তেমনি আরও কি কি সরকারি পরিষেবা পেতে পারেন তার বিস্তারিত নিজে মুখেই জানিয়েছেন মহকুমা শাসক। এদিন মহকুমা শাসক বিপ্লব সরকার বলেন, " রাভা বস্তিতে গিয়েছিলাম। সেখান কার মানুষদের খোজ খবর নিয়েছি। এটা জেনে খুব ভাল লাগল যে রাভা বস্তির প্রায় সকলেই বিভিন্ন রকম সরকারি সুবিধে ও পরিষেবা পাচ্ছেন। লক্ষ্মী ভান্ডার সহ আরও কি কি সরকারি পরিষেবা তারা পেতে পারেন তা তাদের বলা হয়েছে।"
কিন্তু এত প্রত্যন্ত এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঢুকে খোজ নিচ্ছেন মহকুমা শাসক? প্রশ্ন করতেই মুচকি হাসলেন মহকুমা শাসক বিপ্লব সরকার। বললেন, " মানুষের জন্যইতো আমি মহকুমা শাসক। এটাতো আমার কাজের মধ্যেই পড়ে। এখানে অবাক হওয়ার কিছু নেই।" শনিবার সাড়ে তিনটে থেকে প্রায় পাচটা পর্যন্ত রাভা বস্তিতে ছিলেন মহকুমা শাসক। রাভা বস্তির বিরেন রাভা বলেন, " এর আগে আমাদের গ্রামে এত প্রত্যন্ত এলাকায় কোন প্রশাসনিক কর্তা এভাবে আমাদের খোজ নিতে আসে নি। মহকুমা শাসককের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। লক্ষ্মী ভান্ডারের জন্য গ্রামের অনেককেই আবেদন করতে বলেছেন মহকুমা শাসক। শনিবার মহকুমা শাসক লক্ষী ভান্ডার প্রকল্পকে কার্যত রাভা জনজাতির হাতের মুঠোয় তুলে দিলে মহকুমাশাসক বিপ্লব সরকার।