উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে জঙ্গলে জিপ সাফারি চালু রাখার দাবিতে একত্রিত হয়ে আন্দোলনে নামতে চলেছে উত্তরবঙ্গের সমস্ত পর্যটনকারবারিরা। জঙ্গল সাফারি বন্ধ রাখায় কার্যত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েছে পর্যটনকারবারি মহল।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পর্যটনকারবারিরা পর্যটকদের জঙ্গল সাফারি নিষেধ করায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। জিপ সাফারি চালুর দাবি জানিয়ে আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলা শাসকের কাছে কোলকাতা থেকে শুরু করে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার থেকে ৫০ টির বেশি স্মারকলিপি জমা পড়েছে।তা সত্বেও প্রশাসনের এই বিষয়ে কোন হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।
অবশেষে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সমস্ত পর্যটনকারবারিরা এক ছাতার তলায় এসে বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েছে। ডুয়ার্সের জঙ্গলে জিপ সাফারি বন্ধ থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে ডুয়ার্সের পর্যটন শিল্প। এমনিতে বনদপ্তরের নিজস্ব লজ, রিসর্ট, ছাড়া বেসরকারি সমস্ত হোটেল, লজ, রিসর্ট,হোমস্টে খোলা রয়েছে। কিন্তু জঙ্গল নির্ভর ডুয়ার্সের পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকরা বেড়াতে আসেন শুধু মাত্র জঙ্গলে জিপ সাফারির টানে।
ডুয়ার্সের পর্যটনকেন্দ্র গুলোর সাথে দিঘা, মন্দারমনি, তারাপীঠ পর্যটন কেন্দ্রগুলোর অনেক তফাৎ। ডুয়ার্সের পর্যটন শিল্প একমাত্র জঙ্গল সাফারি নির্ভর। স্বাভাবিক ভাবেই জঙ্গল সাফারি বন্ধ হয়ে যাওয়াতে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে ডুয়ার্সের পর্যটন শিল্প।
ডুয়ার্সের জঙ্গল মহলের আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গরুমারা, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান,বক্সা টাইগার রিজার্ভ, রাজাভাতখাওয়া, চিলাপাতা, মূর্তির মতো কেন্দ্রগুলো। এই সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকরা শুধুমাত্র জঙ্গল সাফারির মাধ্যেমেই জঙ্গলের পরিবেশ উপভোগ করতে আসেন।
এই সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে সব মিলিয়ে কমবেশি ২৫০ টি জিপ সাফারির জন্য রয়েছে।
জিপ গুলো বন্ধ থাকায় একদিকে যেমন পর্যটন কেন্দ্র গুলো একেবারেই ফাঁকা। অন্যদিকে জিপসির চালক, ট্যুর গাইডরা কর্মহীন হয়ে আছে। সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গের পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে এই মুহুর্তে প্রায় কয়েক লাখ মানুষ কর্মহীন।
চিলাপাতা ইকো-ট্যুরিজম সোসাইটির কনভেনার অভীক গুপ্তা বলেন, লজ হোমস্টে সব খোলা। কিন্তু জিপ সাফারি বন্ধ থাকায় পর্যটকরা আসছেন না। অভীক গুপ্তা বলেন আমরা একত্রিত হয়ে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের আধিকারিকের দপ্তরের সামনে জিপ সাফারি চালুর দাবিতে রিলে অনশনে বসার প্রস্তুতি নিয়েছি।সকলে এক ছাতার তলায় এই আন্দোলন সংগঠিত করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বার্তা পাঠাবো।
হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্টের কো-অর্ডিনেটর সম্রাট স্যানাল বলেন উত্তরকন্যায় চিফ সেক্রেটারির মাধ্যেমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বার্তা পাঠিয়েছি। কোনও উত্তর আসেনি। এবার পথে নেমে আন্দোলন করবো। এ ছাড়া আমাদের কাছে অন্য কোনও পথ খোলা নেই। এটা তো কেন্দ্র সরকারের সিদ্ধান্ত নয় যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে। আমাদের কথা মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া আর কে শুনবেন। ওনার কাছে আমাদের বার্তা যাওয়াটা জরুরি। আমরা কী ভাবে বাঁচতে পারি সে রাস্তাটা উনিই আমাদের বাতলে দেবেন।