টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিকিম পাহাড়। ধস নেমে, রাস্তা বন্ধ হয়ে গত এক সপ্তাহে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে পর্যটক থেকে সাধারণ মানুষকে। পর্যটকদের এমন অভিজ্ঞতা খুব বেশি না থাকায় তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়েছিল।
কোথাও পাহাড় থেকে পাথর গড়িয়ে পড়ে রাস্তা বন্ধ যায়। কোথাও রাস্তাই ধসে যায় বড় পাথরের চাপে। কোথাও পাহাড়ি ঝরণা নদীর মতো নেমে এসেছে রাস্তার উপর। যার কারণে যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে পড়েছিল।
গোটা সিকিমেই বৃষ্টি হলেও দুর্গমতা ও বিপজ্জনক হওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় উত্তর সিকিমকে। উত্তর সিকিমের একাধিক এলাকায় ধস নেমে রাজ্যের বাকি অংশের সঙ্গে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
বুধবার পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যাপক থাকায় উত্তর সিকিমে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করা যায়নি। বৃহস্পতিবার দুর্যোগের প্রাবল্য কমতেই প্রায় ৩০০ জনের বেশি পর্যটককে উদ্ধার করে রাজধানী গ্যাংটকে নিয়ে আসা হয়েছে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন তাঁরা।
ব্যাপক ভূমি ধসের কবলে পড়েছিল উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকা। চারদিন ধরে একের পর এক ধসের জেরে বিপর্যস্ত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।ফলে উত্তর সিকিমের মঙ্গন, লাচুঙ, লাচেন ও চুংথাং এলাকায় আটকে ছিলেন এই পর্যটকরা। মঙ্গন জেলা প্রশাসন, আইটিবিপি, বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন, জেনারেল রিজার্ভ ইঞ্জিনিয়ার ফোর্সের সহায়তায় ধস এড়িয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।
বুধবার রাতের মধ্যে পর্যন্ত লাচুং-চুংথাং ও লাচেন-চুংথাং সড়কে আটকে পড়া প্রায় ৩০০ জন পর্যটককে প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরাপদে প্রথমে চুংথাংয়ে নিয়ে আসা হয়। সেখানে একটি গুরুদ্বারে সহ কয়েকটি হোটেলে রেখে তাঁদের রাত কাটানোর ব্যবস্থা প্রশাসনের তরফে করা হয়।
প্রায় ৭০টি গাড়িতে তিনশোরও বেশি পর্যটক ও সাধারণ মানুষ ধসের জেরে চুংথাং-লাচুং ও চুংথাং-লাচেন সড়কে আটকে রয়েছেন বলে মঙ্গন জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।
চুংথাং প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ‘লাগাতার ভারী বৃষ্টি এবং পাহাড় থেকে অনবরত বোল্ডার নেমে আসার ফলে উদ্ধারকাজ চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। সড়কে আটকে পড়া পর্যটকদের হালকা খাবার, পানীয় ইত্যাদি সরবরাহ করা হয়েছে।‘
প্রাকৃতিক দুর্যোগে আটকে পড়া পর্যটকদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে স্থানীয় হোটেল অ্যাসোসিয়েশনও।একশোরও বেশি পর্যটকদের হোটেলগুলোতে নিখরচায় থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।