বনদপ্তরের নির্দেশ অমান্য করেই চা বাগানে বন্যপ্রাণীর প্রবেশ ঠেকাতে অবাধে লাগানো হচ্ছে ব্লেডের ফেন্সিং। এর জেরে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে জলদাপাড়া, চিলাপাতা, বক্সা টাইগার রিজার্ভ সহ ডুয়ার্সের বিস্তীর্ন এলাকার জঙ্গলের বন্যপ্রাণী।
এই ব্লেড ফেন্সিংয়ে পা কেটে একটি হাতির মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে ডুয়ার্সে। এছাড়াও ব্লেড ফেন্সিংয়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে একটি লেপার্ডের মৃত্যুও হয়েছে বলে জানিয়েছে বনদপ্তর।
ডুয়ার্সের চা বাগান এবং জঙ্গল একই সাথে পাশাপাশি গড়ে উঠেছে। জঙ্গলের প্রাণী হামেশাই ডুয়ার্সের চা বলয়ে খাদ্যের সন্ধানে প্রবেশ করে। গোটা ডুয়ার্সের জঙ্গল লাগোয়া চা বাগানগুলো হাতিদের করিডর। হাতির দল পাল সব সময়ই চা বাগানে বিচরণ করে বেড়ায়।
টানা তিনমাস বন্যপ্রাণীদের প্রজননের জন্য জঙ্গল বন্ধ ছিল। সবে মাত্র একদিন হল পর্যটকদের জন্য জঙ্গল খুলেছে। আর দুই-তিন মাস বাদেই লেপার্ডের শাবক প্রসব করার সময় চলে আসবে।
মহিলা লেপার্ডের শাবক প্রসব করার জন্য চা বাগানের শান্ত পরিবেশই প্রথম পছন্দ। শাবক প্রসব করার সময় ঘনিয়ে আসতেই চা বাগানের নালায় নিরাপদ আশ্রয়ে শাবক প্রসব করতে চলে আসবে।
আর তখনই চা বাগানের ক্ষুরধার ব্লেডের ফেন্সিংয়ে গায়ের চামড়া ক্ষতবিক্ষত হবার সম্ভাবনা গর্ভবতী লেপার্ডের। এছাড়াও চা বাগানের এই ক্ষুরধার ব্লেডের ফেন্সিংয়ে হাতি, হরিণ, বাইসন, বুনো শূয়র, অজগর সাপের দেহ এই ব্লেডের ফেন্সিংয়ে আগেও অনেকবার কাটা পড়েছে।
রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত হয়েছে জঙ্গলেপ নিরীহ বন্যপ্রাণী। মাঝে মধ্যেই ডুয়ার্সের জঙল থেকে রক্তাক্ত বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বনদপ্তর। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে বনকর্তাদের।
হিমালয়ান নেচার এন্ড অ্যাডভেঞ্চারে ফাউন্ডেশনের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু জানান, বনদপ্তর থেকে এই ব্লেড ফেন্সিং বে-আইনি ঘোষনা করেছে।
চা বাগানের মালিক সংগঠন গুলোর সাথে বনদপ্তর বৈঠক করে এই বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছে। কারণ এই ব্লেড ফেন্সিংয়ে বন্যপ্রাণী আহত হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে এই ব্লেড ফেন্সিংয়ে গলা কেটে বন্য প্রাণীর মৃত্যু ঘটনা ঘটছে।
উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ শাখার মূখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর জানিয়েছেন এই ব্লেড ফেন্সিং পুরোপুরি ভাবে নিষিদ্ধ এবং বে-আইনি। আমরা সমস্ত চা বাগান গুলোকে এই ব্লেড ফেন্সিং খুলতে চিঠি দিয়েছি।