মালদার হবিবপুর ব্লকের আইহো অঞ্চলের বড় আকালপুর এলাকায় প্রতিবারের মতো এ বছরও করোনা আবহতেও একাদশীতে করম উৎসব আয়োজিত।
যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই করম পুজোর ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বেদিয়া সমাজ। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য তাঁরা মরিয়া। তার জন্যই আয়োজিত হয় এই পুজোর।
কবে থেকে শুরু হয়েছে কেউ সঠিক জানে না। প্রত্যেকেই তাঁদের পূর্বপুরুষের কাছ থেকে পেয়েছে এই পুজোর রীতিনীতি ও প্রথা। সেটাই অনুসরণ করে আসছে।
করমের সঙ্গে ঐতিহ্যশালী ঝুমুর নাচের আয়োজনও করে হবিবপুর ও বামনগোলার বেদিয়া সমাজ। তাদের যৌথ উদ্যোগে পিঁপড়া টোলা সামাজিক কল্যাণ সমিতির সদস্যরা।
এই সমাজের লোকেরা প্রকৃতির পূজারি। তাই এই করম পূজা উপলক্ষে পুরনো রীতি মেনে কারাম গাছের ডাল ও পাঁচ ধরনের শস্য -এর বীজের ডালি দিয়ে পুজা অর্চনা শুরু করেন।
প্রথমে কারাম গাছের কয়েকটি ডাল কেটে নিয়ে আসেন ও পাঁচ ধরনের শস্য বিছনের ডালিতে নিজের কৃষ্টি-কালচার মেনে পূজা অর্চনা করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় উপস্থিত ঝুমুর নাচের শিল্পীরা প্রথা মেন হাড়িয়া খেয়ে ঝুমুর নাচে অংশগ্রহণ করে। ঝুমুর নাচের মধ্য দিয়ে নিজেদের কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরেন।
যা চলে শনিবার পর্যন্ত। এই ঝুমুর নাচে হবিবপুর -বামনগোলা ব্লক সহ মালদা জেলা তথা আশেপাশের জেলা থেকেও বেদিয়া সমাজের শিল্পীরা ঝুমুর নাচে অংশগ্রহণ করেন।
ওই এলাকায় আকলপুর পুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল ময়দানে শেষে শনিবার বেলা কারাম গাছের ডাল ও ৫ ধরনের শস্য বিছনের ডালি পাশের পুকুরে নিরঞ্জন করেন ।
পিঁপড়া টোলা বেদিয়া সামাজিক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন মাহাতো জানিয়েছেন এই কারাম পূজা পূর্বপুরুষের পুরনো রীতি মেনে পুজা অর্চনা করে আসছেন।
যাতে বেদিয়া সমাজ লুপ্ত না হয়। কর্মময় জীবনের ব্যস্ততা কাটিয়ে ভাদ্র মাসের প্রথম পূর্ণিমার চাঁদ দেখার ১১ দিনের মাথায় এই পূজা-অর্চনা করা হয়।
এই পূজার মধ্য দিয়ে তাদের রীতিনীতি সংস্কৃতি জিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। তারা প্রকৃতির পুজারি। তাই কারাম গাছে দুটি ডাল কেটে কারাম পূজা ও উৎসব করে থাকেন।
এই বেদিয়া সমাজের করম পুজা যেহেতু কর্মা ও ধরমার নামে পূজা অর্চনা হয়ে থাকে, সেহেতু বেদিয়া সমাজের নতুন প্রজন্মের জীবনে যাতে ধর্ম-কর্ম সমান ভাবে প্রচলিত হয়ে থাকে সেই জন্যই কারাম পূজা করা হয়ে থকে।