scorecardresearch
 

৫ বছর ধরে হোঁচট খেয়ে সাত বছরে পরিষেবা দিতে শপথ সুপার স্পেশালিটি ব্লকের

২০১৫ সালে শুরু করে ৬ বছরে দুবার টেন্ডার বাতিল করতে হয়েছে কাজে গাফিলতি ও মান ঠিক না থাকায়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ১৫০ কোটির সুপার স্পেশালিটি ব্লক কবে দিনের আলো দেখবে কেউ জানে না। তৃতীয়বার টেন্ডার করে ২০২২ এর মার্চ-এর মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেষ হবে ? দেড়শো কোটির প্রশ্ন এখন ওটাই।

Advertisement
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
হাইলাইটস
  • দুবার টেন্ডার বাতিল, কাজ কিছুতেই এগোয় না
  • আপাতত ২০২২ এর মার্চ পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা
  • ১৫০ কোটির ভবিষ্যত নিয়ে আশঙ্কা উত্তরবঙ্গের

কাজ থমকে, পরবর্তী লক্ষ্য মার্চ ২০২২

৬ বছরেও কাজ এগোয়নি, দুবার কাজ শুরু করেও বাতিল টেন্ডার। অবশেষে সাত বছরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে সুপার স্পেশালিটি ব্লক শেষ করতে শপথ স্বাস্থ্য দফতরের। যদিও নতুন করে ফের কাজ বাতিল করতে হলে এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের দাবি।

শনিবার চরমবার্তা ঠিকাদার সংস্থাকে

গত শনিবার এই বরাত পাওয়া ঠিকাদারি সংস্থার সাথে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি বৈঠক হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা, ডিন সন্দ্বীপ সেনগুপ্ত সহ বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার আধিকারিকরা। এদিনের এই বৈঠকে প্রজেক্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এদিনের এই বৈঠকে থেকে কাজ সম্পূর্ণ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত।

কাজ কিছুতেই এগোয় না

ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, ২০১৫ সাল থেকে কাজ শুরু হয়েছিল সুপার স্পেশালিটি ব্লক তৈরির। কিন্তু কাজ শেষ হয়নি। তাই ২০২২ সালের মার্চ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সুপার স্পেশালিটি ব্লক তৈরি হলে প্রতিদিন অন্তত উত্তরবঙ্গের পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনের মাধ্যমে ভালো স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন।

একাধিক পরিষেবা

উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তরফে জানা গিয়েছে প্রস্তাবিত চার তলা এই মাল্টি সুপার স্পেশালিটি ব্লকে থাকবে অত্যাধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে ঝাঁ-চকচকে চিকিৎসা পরিষেবা।

গ্রাউন্ড ফ্লোরে থাকবে সিটি স্ক্যান, এম আর আই, ল্যাবরেটরি, এক্সরে ও ছোট অপারেশন থিয়েটার। 

প্রথম তলে থাকছে ২১ টি বহির্বিভাগ, বার্ন ওটি, ১০ বেডের আইসিসিইউ, ২০ বেডের ইউরোলজি ওয়ার্ড।

Advertisement

দ্বিতীয় তলে ২০ বেডের নিউরোলজি বেড, ২২ বেডের নিউরো সার্জারি, ২০ বেডের প্লাস্টিক সার্জারি, সিটিভিএস ও সিটিভিএস ট্রিটমেন্ট ওয়ার্ড।

তৃতীয় তলে থাকছে ২২ বেডের পেডিয়াট্রিক সার্জারি, ২০ বেডের কার্ডিওলজি ,১৫ বেডের ডায়ালিসিস, ২২ বেডের নেফ্রলজি ওয়ার্ড ও চিকিৎসকদের চেম্বার।

চতুর্থ তলে থাকবে ৬ টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, ক্যাথলাব, আইসিসিইউ ওয়ার্ড।

এছাড়াও ব্লকের বাইরে থাকবে পার্কিং সিস্টেম, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট ক্লান্ত রোগীর পরিবারের জন্য সমস্ত রকম সুবিধা যুক্ত ওয়েটিং রুম।

৭৫ শতাংশ কাজ শেষ

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই এই ব্লক তৈরির কাজের ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। বাকি সিভিল ওয়ার্ক এর কাজ দ্রুত তার সাথে শেষ করতে তৎপর স্বাস্থ্য বিভাগ।

দিল্লীর সংস্থাই ডুবিয়েছে

উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে ঢেলে সাজাতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে তরফে ২০১৫ সালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ১৬ হাজার বর্গ মিটার জমিতে পৃথক মাল্টিস্পেশালিটি ব্লক তৈরি করার প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পে চার তালা বিশিষ্ট সুপার স্পেশালিটি ব্লক তৈরি করে সেখানে অত্যাধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গে চিকিৎসা পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেইমতো ২০১৫ সালেই দিল্লির একটি বরাদ্দ প্রাপ্ত সংস্থা কাজ শুরু করে দেয়।

ছন্দপতন

তবে কাজ শুরু হওয়ার প্রায় তিন বছরের মাথায় ২০১৮ সালে ওই বরাদ্দ প্রাপ্ত সংস্থা কাজে ঢিলেমি করায় স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে ওই সংস্থাকে কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। পরবর্তীতে আবার ২০১৮ সালে আবারও দিল্লির একটি ঠিকাদারি সংস্থার সুপার স্পেশালিটি ব্লক তৈরির কাজ শুরু করে। কিন্তু কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই আবার ওই সংস্থা ২০১৯ সালে কাজে গড়িমসি করায় সংস্থাকেও কালো তালিকা অন্তর্ভুক্ত করে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

নতুন টেন্ডার

অবশেষে ফের ২০২০ সালে টেন্ডারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ দিল্লির ঠিকাদারি সংস্থা হসপিটাল সার্ভিসেস কনসালটেন্ট কর্পোরেশন এই মাল্টি সুপার স্পেশালিটি ব্লক তৈরি করার বরাত পায়।

 

Advertisement