ইউক্রেন পোল্যান্ড সীমান্ত পার হতে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করতে হচ্ছে। তবে এখানেই শেষ নয়, কোথাও কোথাও আবার টাকার বিনিময়ে পার করানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সীমান্তে পড়ুয়াদের হেনস্থারও অভিযোগ উঠেছে। ইউক্রেনে আটকে থাকার পর নিজেদের বাড়ি ফিরে এমনই অভিজ্ঞতার কথা শোনালো ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়ারা।
গোটা ইউক্রেন এখন যুদ্ধবিধ্বস্ত। ঘন ঘন সাইরেনের আওয়াজ। আর আওয়াজ পেলেই বাঙ্কারে গিয়ে মুখ লুকানো। এটাই এখন রুটিন। ইতিমধ্যে দেশ ছেড়ে বাড়ি ফিরতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ওই দেশে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়ারা। আর বাড়ি ফিরতেই তাদের চোখে মুখে রয়েছে শুধু আতঙ্ক। শুনিয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতার কথা। জানা গিয়েছে ইউক্রেনে পড়াশোনা করতে গিয়ে আটকে পড়েছিল শিলিগুড়ি মহকুমার খড়িবাড়ির বাসিন্দা লাভিভ ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া অরবিন্দ ছেত্রী ও শিলিগুড়ির বাসিন্দা রাইকমল বসু।
শুক্রবার তারা দিল্লি হয়ে বাগডোগরা ফিরলেন পড়ুয়ারা
শুক্রবার তারা দিল্লি হয়ে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে নিজেদের বাড়িতে ফিরলে ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়া রাইকমল বসুর সঙ্গে দেখা করতে যান শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বাড়ি ফিরে আসায় তাকে শুভেচ্ছা জানান তিনি। রাইকমলের সঙ্গে ইউক্রেনের অভিজ্ঞতার কথা শোনেন। পাশাপাশি আগামীতে কোনও অসুবিধা হলে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক। এদিন বাড়ি ফেরত পড়ুয়ারা জানিয়েছে ইউক্রেন থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার হেঁটে পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছাতে হয়। সেখান থেকে ভারতীয় দূতাবাস নিরাপদে প্রত্যেক পড়ুয়াদের বাড়ি ফেরার জন্য সব রকম সহযোগিতা করেছে।
খোলা আকাশের নীচে অপেক্ষা করতে হচ্ছে
তবে তাদের অভিযোগ হলো, সীমান্তে পৌঁছলেও তা পার হতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। একদিকে, হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যে পায়ে হেঁটে সীমান্তে পৌঁছতে হচ্ছিল। তার মধ্যে পায়ে হেঁটে সীমান্তে পৌঁছলেও সেখানে সমস্যা কম ছিল না। ইউক্রেন সীমান্তে টাকার বিনিময়ে পার করানো হচ্ছে সীমান্ত। টানা দু থেকে আড়াই দিন ঠান্ডার মধ্যে খোলা আকাশের নীচে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ইউক্রেন - পোল্যান্ড সীমান্ত পার হতে।
মাথাপিছু একশো ডলার
এদিন ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়া অরবিন্দ ছেত্রী বলেন, "ভারত সরকার খুব ভালো সহযোগিতা করেছে। কিন্তু ইউক্রেন পোল্যান্ড সীমান্তে মাথাপিছু একশো ডলারের বিনিময়ে সীমান্ত পার করানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সে সময় সীমান্ত পারাপারকারীদের সঙ্গে জওয়ানদের সংঘর্ষও হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে কুকুর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। আকাশে গুলি ছোড়া হয়েছিল। তবে আড়াই দিন আমাদের খোলা আকাশের নীচে প্রবল ঠান্ডায় অপেক্ষা করতে হয়েছিল সীমান্ত পার করতে।
বাড়ি ফিরে ভাল লাগছে
অন্যদিকে আরও এক উক্রেন ফেরত পড়ুয়া রাইকমল বসু বলেন, "আমরা খুব আতঙ্কে ছিলাম। এটিএমে টাকা ছিল না, খাবার আর পানীয় জলের ভীষণ অভাব ছিল। বারেবারে সাইরেন বাজছিল। আমরা টানা পথ হেটে ইউক্রেন সীমান্ত পার করি। বাড়ি ফিরে ভালো লাগছে।"