তৃণমূল-বিজেপি পাশাপাশি !
ত়ৃণমূল নেতানেত্রীরা অন্য দলের নেতানেত্রীদের সঙ্গে পারত পক্ষে মঞ্চ ভাগ করে নেন না। এমনকী যদি নির্বাচিত প্রতিনিধিও হন তাহলেও নন। এমনই নাকি তাঁদের উপর তলার নির্দেশ রয়েছে। ফলে গত এক দশকে তৃণমূলের কোনও নেতার সঙ্গে বিরোধীদের দেখা যায়নি। আলিপুরদুয়ারে সেই ট্র্যাডিশন ভেঙে বিজেপি-তৃণমূল একই মঞ্চে। তাও আবার পাশাপাশি। ফলে এখন ব্যাপক হইচই। তাহলে কী অন্য কোনও ইঙ্গিত রয়েছে এর পিছনে ? এই প্রশ্নই ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে।
সাপে-নেউলে ভাইভাই
সর্বভারতীয় স্তরে দুই দলের সম্পর্ক তলানিতে, তখন আলিপুরদুয়ার জেলায় বিজেপি এবং তৃণমূলের ঠিক অন্য চিত্র ধরা পড়ল। দেশের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের একই মঞ্চে পাশাপাশি বসতে দেখা গেল আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের সভাপতি মৃদুল গোস্বামী এবং আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালকে। এই ঘটনায় দুই দলের অন্দরেই রাজনৈতিক কানাঘুষো শুরু হয়েছে।
রাজ্যের উল্টো চিত্র আলিপুরদুয়ারে
এই সময় ত্রিপুরায় একের পর এক তৃণমূলের রাজ্যস্তরের নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হচ্ছে বিজেপির তরফে। সে রাজ্যের শাসকদল বিজেপি। ত্রিপুরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বেশ কিছু তৃণমূল নেতাকে। ত্রিপুরায় দলের নেতাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে এ রাজ্যের তাবড় তৃনমুলের নেতারা। ত্রিপুরায় কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে সে রাজ্যে যাবার কথা এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়েরও।
বিতর্কের কেন্দ্রে মৃদুল-সুমন
সেই পরিস্থিতিতে বিজেপির বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল এবং জেলা তৃণমূলের সভাপতি মৃদুল গোস্বামীকে একই মঞ্চে পাশাপাশি বসতে দেখে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর আগেও কালচিনিতে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে জেলা তৃণমূলের সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, কালচিনির বিজেপির বিধায়ক বিশাল লামার সাথে করমর্দন করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন।
সৌরভের অন্তর্ঘাত দাবির প্রসঙ্গ ফের চাঙ্গা
এবার ফের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের সাথে একই মঞ্চে পাশাপাশি বসে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে একমাত্র আলিপুরদুয়ার জেলাতেই সমস্ত আসনে বিজেপির কাছে তৃণমূলের বিধায়ক পদ প্রার্থীরা পরাজিত হন। ২ মে ভোট গণনার দিনই আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী ভোটে পরাজিত হবার পরেই সংবাদ মাধ্যেমে দলের প্রথম সারির নেতাদের বিরুদ্ধে অর্ন্তঘাতের অভিযোগ করেন। সৌরভ নির্দিষ্ট কোনও নেতার নাম না করেই বলেন, দলের প্রথম সারির নেতারা জেলার সবগুলো আসনে অর্ন্তঘাত করাতেই জেলায় তৃণমূলের সমস্ত প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। এই বিষয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেছেন সৌরভ চক্রবর্তী।
কাকতালীয় বলে দাবি দুই দলেরই
যদিও এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা আমাকে যেখানে বসতে দিয়েছেন আমি সেখানেই বসেছি। এখানে অযাথা রাজনৈতিক রং খোঁজার কোনও কারণ নেই। এ বিষয়ে বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে বিজেপি দলের সহ-সভাপতি জয়ন্ত রায় বলেন অনুষ্ঠানের আয়োজকরা দুই জনকে যেখানে বসতে দিয়েছে তারা সেখানেই বসেছে। বিষয়টা একেবারেই কাকতালীয়।