দার্জিলিং পাহাড়ের মধ্যে এক টুকরো লেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে রংবেরংয়ের শিকারা। ঠিক যেন কাশ্মীরের ডাল লেক।লেকের টলটলে জল ছিটিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকের দল। ২-৪ দিন ছুটি থাকলে কাশ্মীর ঘুরে আসা সম্ভব নয়। আর গাঁটের কড়ি কত আছে তাও তো দেখতে হবে! তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোই বলুন, আর এক টুকরো কাশ্মীরের স্বাদ হাতের কাছেই বলুন, মিরিকে নতুন এই বন্দোবস্ত নেহাত খারাপ লাগবে না।
মিরিক লেকে ঘুরছে শিকারা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিরিককে আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে বাড়তি উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন পর্যটন দফতরকে। এ জন্ ৫৬ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। তা ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন জিটিএ-র আলাদা পর্যটন বিভাগ রয়েছে। তাদের সহযোগিতায় উদ্যোগে শিকারা আমদানি করা হয়েছে। লেক এবং সংলগ্ন অঞ্চলগুলিতে সৌন্দর্যায়নের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। পর্যটকদের কাছে মিরিককে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পর্যটন সহ সরকারের একাধিক দপ্তর ও মিরিক পুরসভা একযোগে প্রকল্প রূপায়নের কাজ করছে। এই মুহূর্তে মিরিকের উন্নয়নের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে। ৩০টির মতো ছোট-বড় প্রকল্পের পরিকল্পনা রূপায়ন করা হবে। যার অন্যতম হল মিরিক লেকে শিকারা ভ্রমণ।
আরও পড়ুনঃ ঘরের কাছে সুইজারল্যান্ড, মিরিকের সুইস কটেজ দেখেননি এখনও !
ভিড় বাড়ছে শিকারার টানে
সবচেয়ে বেশি শিলিগুড়ি থেকে এখানে হর-হামেশা পর্যটকরা আসেন। তাছাড়া আসপাশের এলাকা থেকেও প্রচুর লোক আসেন। এ রাজ্যের কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের পর্যটকদের কাছে মেঘের রাজ্য মিরিক আলাদা তাৎপর্য নিয়ে আসে। দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও এখন বেড়াতে আসেন মিরিকে। এখানকার সুইস কটেজ তো সব সবসময়ই বাড়তি আকর্ষণ। কাশ্মীরের ডাল লেকের মতো করে ভাবনা নিয়েই আনা হয়েছে শিকারা। সঙ্গে পর্যটকদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে শিকারায় থাকবেন একজন মাঝিও।
শিকারায় ভ্রমণ ও মাছ ধরা
পর্যটকদের জন্য মিরিক লেকে মাছ ধরার ব্যবস্থা চালু করার ভাবনা রয়েছে প্রশাসনের। শুধু তাই নয়, নিজের শিকার করা মাছ লেকের ধারে বসে গ্রিল করে খেতে পারবেন পর্যটকরা। সেই ব্যবস্থাও চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আন্তর্জাতিক মানের লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো শুরু করারও চিন্তাভাবনা রয়েছে রাজ্যের। এছাড়া মিরিকে স্থায়ী অর্কিড প্রদর্শনশালা ও বিক্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ভাড়া কত?
আধ ঘন্টার জন্য ভাড়া ধরা হয়েছে ৫০০ টাকা প্রতি শিকারা। জনা চারেক আরামসে উঠতে পারবেন। ফলে মাথাপিছু খরচ খুব একটা বেশি নয়। মাত্র ১২৫ টাকা। সঙ্গে বাচ্চা থাকলেও উঠতে পারবে।
কীভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে বাসে এলে শিলিগুড়ি জংশনে তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস। ট্রেনে এলে এনজেপি স্টেশন বিমানে এলে বাগডোগরায় নামতে হবে। সব জায়গা থেকেই সরাসরি মিরিকে যাওয়ার গাড়ি রিজার্ভ পাওয়া যায়। তিন থেকে চার হাজার টাকা নেবে। আর শেয়ারে যেতে হলে তেনজিং নোরগে টার্মিনাসের সামনে থেকে ছোট গাড়ির স্ট্যান্ডে শেয়ার জিপ, সুমোতে যেতে পারেন। জন প্রতি ২০০ টাকার মধ্যে ভাড়া লাগবে। শিলিগুড়ি থেকে ৫২ কিলোমিটার আর দার্জিলিং থেকে ৪৯ কিলোমিটার। ফলে যে কোনও জায়গা থেকে একই সময় লাগে।