পুলিশের যৌথ অভিযান, শিলিগুড়িতে ধৃত নাগা জঙ্গিদিন মজুরের ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে থাকা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের এক সদস্যকে শিলিগুড়ি থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। অরুণাচল প্রদেশ পুলিশের বিশেষ টিম ও শিলিগুড়ি পুলিশের প্রধাননগর থানা, যৌথ অভিযান চালিয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তি নর্থ ইস্টের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ন্যাশনাল সোসালিস্ট কাউন্সিল অফ নাগাল্যান্ডের সক্রিয় সদস্য। এই ঘটনার পর থেকে যে এলাকায় তিনি ভাড়া থাকছিলেন সেই এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম করিম খান। তার বাড়ি অসমে। তবে গত ছয় মাস ধরে শিলিগুড়ির শালবাড়ি এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকছিল সে। এখানে দিনমজুরের পরিচয় দিয়ে থাকছিল করিম। পাশাপাশি মজুরির কাজও করতো।উত্তর-পূর্ব ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ছ'টি ভাষা অনায়াসে বলতে পারে করিম বলে জানা গিয়েছে। তার কাছ থেকে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতকে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি মহাকুমা আদালতে পেশ করে তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে অরুণাচল প্রদেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ধৃতের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড সহ পরিচয় পত্র ও বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী সংবাদমাধ্যমকে জানান, অরুণাচল প্রদেশের পুলিশ তাদের সহায়তা করা হয়েছে। এরপর যৌথ অভিযান চালিয়ে যুবককে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। সে বিষয়ে তদন্তে সহায়তা করছে।
গত ২৯ আগস্ট অরুণাচলের তিরাপ জেলার খোনসা থানায় এক ব্যবসায়ী একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল নাম ভাঁড়িয়ে করিম খান নিজেকে রকি থাপা পরিচয় দিয়ে তাঁকে ফোন করে। পাশাপাশি ওই জঙ্গি সংগঠনের সদস্য হিসেবে ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা টাকাও দাবি করেছিল। টাকার পাশাপাশি সংগঠনের সদস্যদের জন্য রসদ হিসেবে চাল দাবি করে। ফোন পেয়েই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ঐ ব্যবসায়ী। এরপর তদন্তে নেমে যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল সেটির সন্ধান শুরু করে পুলিশ। এরপর ফোন ট্র্যাক করে জানা যায় যে, ফোনটি গিয়েছে শিলিগুড়ি থেকে। এরপরই শিলিগুড়ি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে অরুণাচল পুলিশ। ৩০ অগাস্ট অরুণাচল থেকে একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল শালবাড়িতে অভিযান চালায়। তারপরে গ্রেফতার করা হয় তাকে। করিমের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে করিম যে সংগঠনের সদস্য, সেই সংগঠনটি ২০১৫ সালে অসম রাইফেলসের জওয়ানদের উপর হামলা করে ।তারপর থেকে সংগঠনকে নিষিদ্ধ হিসেবে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। এরপর থেকে সংগঠনের সদস্যরা আত্মগোপন করে থেকে নিজেদের কার্যকলাপ চালায়। এই সংগঠনেরই জন্যই ধৃত করিম কাজকর্ম করছিল বলে জানা গিয়েছে।