
Alipurduar Doctor Harassment Case: আলিপুরদুয়ারের জেলা হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে রাতবিরেতে ভিডিও কল ও ফোন করে বিরক্ত করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন এক বাদাম বিক্রেতা। হাসপাতাল চত্বরেই বাদাম বিক্রি করতেন ওই অভিযুক্ত তরুণ। তাঁর নাম মৃন্ময় দাস, বাড়ি সলসলাবাড়িতে। শনিবার আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ তাঁকে আদালতে তোলে। আদালত ১৪ দিনের জেলা হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই হাসপাতালজুড়ে চাঞ্চল্য।
ঘটনার সূত্রপাত প্রায় এক মাস আগে। রাত প্রায় তিনটে নাগাদ এক অচেনা নম্বর থেকে ভিডিও কল আসে জেলা হাসপাতালের এক মহিলা ট্রেনি চিকিৎসকের ফোনে। প্রথমে তিনি বিষয়টি উপেক্ষা করলেও পরদিন আবার ফোন আসে। তখন কলারের পরিচয় দেন অভিযুক্ত মৃন্ময় দাস। চিকিৎসক দ্রুত নম্বরটি ব্লক করে দেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই অন্য নম্বর থেকে ফের ফোন ও ভিডিও কল শুরু হয়। অবশেষে তীব্র বিরক্ত হয়ে তিনি থানায় অভিযোগ জানান।
আলিপুরদুয়ার থানার আইসি অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, “অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। কীভাবে চিকিৎসকের নম্বর তাঁর হাতে এল, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন বছর ধরে জেলা হাসপাতাল চত্বরে বাদাম বিক্রি করতেন মৃন্ময় দাস। প্রতিদিনই তাঁকে হাসপাতালের আউটডোরের সামনে দেখা যেত। তবে এতদিন পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ওঠেনি। চিকিৎসক যে আউটডোরে বসতেন, সেখানে প্রায়ই ঘোরাঘুরি করতেন মৃন্ময়। তবে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত নম্বর তাঁর হাতে এল কীভাবে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
হাসপাতালের এক সিনিয়র চিকিৎসক বলেন, “চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত নম্বর সাধারণত বাইরে দেওয়া হয় না, বিশেষ করে মহিলা চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে তো নয়ই। তাই এই নম্বর কীভাবে বাইরে গেল তা খতিয়ে দেখা জরুরি।” অন্যদিকে, অভিযুক্তের পরিবার দাবি করেছে, “ছেলেটি নিরীহ। সে ভুল বুঝে এমনটা করে ফেলেছে।” যদিও পুলিশ জানিয়েছে, তাঁরা প্রমাণের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করেছে।
ঘটনার পর থেকেই জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। হাসপাতালের এক মহিলা ডাক্তার বলেন, “এই ধরনের ঘটনা আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। আমরা চাই, দোষীর যথাযথ শাস্তি হোক।”
এই ঘটনার পর হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাসপাতালের ভিতরে ও বাইরে নজরদারি আরও কড়া করা হবে।