বক্সিরহাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র (Boxirhat) থেকে রোগী উধাওয়ের অভিযোগে তুলকালাম কোচবিহরে। এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে কোচবিহারে (Coochbehar)। ঘটনায় গতকাল রাতেই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রোগীর আত্মীয়-পরিজনরা।
বৃহস্পতিবার রাতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গেটের সামনে অবস্থানে বসে পড়েন রোগীর আত্মীয়-পরিজনরা। তাঁদের চিৎকারে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বক্সিরহাট থানার পুলিশ। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে শেষ পর্যন্ত অবস্থান তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। এদিন বক্সিরহাট থানায় (Boxirhat Police Station) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে নিখোঁজ রোগীর পরিবার।
প্রবল জ্বর নিয়ে বুধবার বক্সিরহাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হন ভানুকুমারী-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের নাগারখানার বাসিন্দা অসুরউদ্দিন মিয়াঁ (৫৮)। এই পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। গতকাল সকালে তাঁকে ইনজেকশন দিতে যান নার্সরা। সেই সময় হঠাৎই স্যালাইন খুলে দৌড়ে পালিয়ে যান ওই ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, পাশে তাঁর মা চিৎকার-চেঁচামেচি করলেও কেউই ওই রোগীকে আটকানোর চেষ্টা করেননি। বিকেলে কর্তৃপক্ষের তরফে রোগীর নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করা হয় বক্সিরহাট থানায়। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চারজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। এদিকে চিকিৎসক ও নার্সের সামনে রোগী দৌড়ে পালালেও কেন আটকানো গেল না, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন রোগীর আত্মীয়-পরিজনরা।
যদিও সরকারিভাবে হাসপাতালের কেউ এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। যদিও নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসকের দাবি, ‘ওই রোগী মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। ইনজেকশন দেখে দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। আমরা থানার দ্বারস্থ হয়েছি।’
গীর স্ত্রী রহিমা বিবির অভিযোগ, ‘জ্বর নিয়ে স্বামীকে বুধবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেছি। বৃহস্পতিবার ইনজেকশন দেওয়ার সময় স্বামী দৌড়ে পালিয়ে যায়। শাশুড়ি শত চিৎকার করলেও কেউই তাকে আটকানোর চেষ্টা করেননি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তরফে খোঁজ করার ব্যবস্থাটুকু করা হয়নি। এমনকী থানা থেকেও কোনও রকম সহযোগিতা করা হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিরাপত্তারক্ষী থাকার পরও কিভাবে রোগী উধাও হয়ে গেল তা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন তুলছেন তিনি।
তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে চিকিৎসকরা দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমার স্বামী মানসিক রোগী নয়। চিকিৎসকরা ভুল ওষুধ দেওয়ায় তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমরা বিচারের দাবিতে আন্দোলনে বসেছি।’