অন্তরঙ্গ ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল বিবাহিত প্রেমিকার, বালুরঘাটে আত্মঘাতী সিভিক ভলান্টিয়ার

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বালুরঘাট পুরসভার বাসিন্দা ওই যুবক ২০২১ সালে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি পান। আগে বালুরঘাট থানায় কর্মরত থাকলেও এ বছর পুজোর সময় তাঁকে ট্র্যাফিক বিভাগে বদলি করা হয়। তবে গত দু’মাস ধরে কাজে যাচ্ছিলেন না বলে জানান সহকর্মীরা।

Advertisement
অন্তরঙ্গ ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল বিবাহিত প্রেমিকার, বালুরঘাটে আত্মঘাতী সিভিক ভলান্টিয়ার

বালুরঘাটের এক সিভিক ভলান্টিয়ারের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সারা জেলায়। পরিবারের অভিযোগ, এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের জেরে দীর্ঘদিন ধরে ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হচ্ছিলেন ওই যুবক। অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বারবার টাকা আদায় করা হচ্ছিল তাঁর কাছে। কয়েকদিন আগে ফের দু’লক্ষ টাকার দাবি আসায় মানসিক চাপে ভেঙে পড়েন ৩২ বছরের যুবক। সেই চাপ কাটাতে না পেরে শনিবার রাতে বাড়িতে একাই থাকা অবস্থায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি।

রাতেই খবর পেয়ে পুলিশ তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে বালুরঘাট হাসপাতালে পাঠায়। রবিবার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। মৃত যুবকের মা বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ওই প্রেমিকার বিরুদ্ধে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল জানান, “লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বালুরঘাট পুরসভার বাসিন্দা ওই যুবক ২০২১ সালে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি পান। আগে বালুরঘাট থানায় কর্মরত থাকলেও এ বছর পুজোর সময় তাঁকে ট্র্যাফিক বিভাগে বদলি করা হয়। তবে গত দু’মাস ধরে কাজে যাচ্ছিলেন না বলে জানান সহকর্মীরা।

দু’বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল এলাকারই এক তরুণীর সঙ্গে। রয়েছে ১৬ মাসের এক পুত্র সন্তান। পরিবার চালানোর সামর্থ্য সীমিত। মা পরিচারিকার কাজ করেন, স্বামীর অনিয়মিত অর্থসাহায্যে বাধ্য হয়ে স্ত্রীও অন্যের বাড়িতে কাজ শুরু করেছিলেন। এই সময়েই ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে এক বিবাহিত মহিলার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। যা পরে দুই পরিবারেই অশান্তি ডেকে আনে।

অভিযোগ, দু’মাস আগে তিনি ওই মহিলাকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে চলে যান এবং স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। তবে সপ্তাহখানেক আগে দাম্পত্য সম্পর্ক মেরামত করতে আবার নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। ঠিক তার পর থেকেই ফের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন প্রেমিকা। অন্তরঙ্গ ছবি ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে বহুবার টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ, যার মধ্যে দু’বার, ১৯ হাজার ও ৭ হাজার টাকার লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে তাঁর মোবাইলে পাওয়া কল রেকর্ডিংয়ে।

Advertisement

মৃত যুবকের জামাইবাবুর দাবি, “ওই মহিলার আরও বেশ কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। এটা শ্যালক বুঝে গিয়েছিল। তাই ভাড়াবাড়ি ছেড়ে ফিরে এসেছিল। কিন্তু ফের ব্ল্যাকমেল শুরু হয়।” পরিবারের অভিযোগ, শেষবার দু’লক্ষ টাকা চাওয়া হলে ভয় ও অপমানে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে যুবক। এক সহকর্মীর কথায়, “ওই মহিলার অত্যাচারেই আমার বন্ধু আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।”

 

POST A COMMENT
Advertisement