উত্তরবঙ্গে বন্যা যেদিন বড় আকার ধারণ করে সেদিনই কলকাতায় দুর্গাপুজোর কার্নিভালে অংশ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এত মানুষের মৃত্যুর পরও কেন কার্নিভাল চালানো হল? প্রশ্ন তোলে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের মতো বিরোধীরা। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের উত্তরকন্যা থেকে তার জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি জানান, সেদিনই অর্থাৎ ৫ তারিখ উত্তরবঙ্গে তিনি উত্তরবঙ্গে গেলে উদ্ধারকার্য ব্যহত হত। তাই তিনি যাননি। তিনি চেয়েছিলেন, আগে উদ্ধারকার্য হয়ে যাক। মমতার কথায়, 'এই কার্নিভাল বাংলার গর্ব। এতগুলো ক্লাব আশা করে বসেছিল। তারা হতাশ হবে না? সব আগে থেকে ঠিক ছিল, ক্যানসেল করা কি সম্ভব? আর ক্যানসেল করেও বা কী করতাম। আমরা এলে আমাদের দেখতে গিয়ে উদ্ধারকার্য ব্যহত হত। আমরা এলে জেলা প্রশাসন কাদের প্রায়োরিটি দিত? আমরা সেদিন এসে কী করতাম? আর আমি বিশ্বাস করি উদ্ধারকার্যের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া উচিত।'
মমতা আরও বলেন, '৪ তারিখ ভোর ৫টায় ডিজি এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। স্থানীয় স্বাস্থ্য ও জেলা আধিকারিকেরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছিলেন। একটা দুর্যোগ ঘটে গেলে উদ্ধারকাজ শুরুর জন্য অন্তত ৪৮ ঘণ্টা সময় দিতে হয়। আমরা ঘটনার ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে এসে গেছি। ২৪ ঘণ্টা উদ্ধারের জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। যারা উদ্ধার করেছে তাদের প্রশংসা করতে হবে। আমরা যদি চলে আসতাম বিকেল বিকেল তাহলে প্রশাসন ব্যস্ত হয়ে পড়ত। সেটা চাইনি।'
মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় দাবি করেন, রাজনীতিবিদদের একাংশ দাবি করছে, ব্রিজ ভেঙে নাকি মানুষ মারা গেছে। কিন্তু তা ঠিক নয়। বরং জলের কারণে ও ধস নেমে মারা গেছে। তাঁর কথায়, 'হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডেও তো অনেকে মারা যান। প্রাকৃতিক দুর্যোগেও মারা যায়। তখন তো সেখানকার সরকার হিসাব দেয় না। তখন তো টাকা দেওয়া হয় তাদের। বাংলাকে কেন বঞ্চনা করা হয়?'
উত্তরকন্যা থেকে মমতা আরও জানান, বুধবারই তিনি উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে আসবেন কলকাতায়।তবে ফের ফিরবেন উত্তরে কয়েকদিনের মধ্য়েই। বলেন, 'প্রাথমিক পর্যায়ে যা যা করার করে গেলাম, প্রশাসনিক কর্তারা বাকি কাজ করবেনই। কাল এখান থেকে বেরিয়ে গেলেও দু’তিন দিনের মধ্যে আবার ফিরে আসব। তত দিনে ফিল্ড সার্ভে করে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত খতিয়ান জানার সময়ও পাওয়া যাবে।'