Birbhum Sonali Bibi Return: বীরভূমের ঘরে ফিরলেন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি, বললেন, 'আর দিল্লি যাব না'

আদালতের নির্দেশ মান্য করে শুক্রবার মালদহ সীমান্ত দিয়ে সোনালি ও তাঁর ছেলেকে দেশে ফেরায় কর্তৃপক্ষ। বিএসএফের হেফাজত থেকে তাঁদের প্রথমে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানান, সোনালির শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল। শনিবার দুপুরে তাঁকে ছুটি দেওয়া হলে বাড়ি পৌঁছোন তিনি।

Advertisement
বীরভূমের ঘরে ফিরলেন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি, বললেন, 'আর দিল্লি যাব না'নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালির ঘরে ফিরতেই আবেগে ভাসল বীরভূমের পাইকর

নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় দেশছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা পিছনে ফেলে অবশেষে বীরভূমের নিজের বাড়িতে ফিরলেন সোনালি বিবি। বহু দিনের অনিশ্চয়তার পর শুক্রবার যখন তিনি সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেন, তখন তাঁর চোখে ছিল কান্না আর স্বস্তির মিশ্র রেশ। ছেলের হাত শক্ত করে ধরে বাড়ির দরজায় পা রাখতেই আবেগ সামলাতে পারেননি সোনালি। তাঁর একমাত্র দাবি, বাংলাদেশে আটক থাকা পরিবারের বাকি সদস্যদেরও যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

ঘটনার সূত্রপাত গত জুন মাসে। দিল্লিতে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ সন্দেহে সোনালিসহ ছ’জনকে আটক করে পুলিশ। অভিযোগ, তাঁদের ‘পুশ ব্যাক’ করার সময় সোনালি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরে ২০ অগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ একই অভিযোগে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। শেষ পর্যন্ত ছ’জনের জায়গা হয় সংশোধনাগারে, আর সেখানেই কাটে দীর্ঘ কয়েক মাস।

ঘটনায় মানবিক দিকটি সামনে এনে সুপ্রিম কোর্ট গত বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয়, সোনালি বিবি ও তাঁর আট বছরের সন্তানকে অবিলম্বে ভারতে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু তাই নয়, দেশে ফেরার পর তাঁর চিকিৎসারও দায়িত্ব নিতে হবে কেন্দ্রকে। পরপর নথিপত্র খতিয়ে দেখে শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তোলে,একজন নাগরিককে ‘বিদেশি’ ঘোষণা করার পদ্ধতি কতটা নির্ভুল, কতটা মানবিক?

আদালতের নির্দেশ মান্য করে শুক্রবার মালদহ সীমান্ত দিয়ে সোনালি ও তাঁর ছেলেকে দেশে ফেরায় কর্তৃপক্ষ। বিএসএফের হেফাজত থেকে তাঁদের প্রথমে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানান, সোনালির শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল। শনিবার দুপুরে তাঁকে ছুটি দেওয়া হলে বাড়ি পৌঁছোন তিনি।

বাড়ি ফেরার খবর ছড়িয়ে পড়তেই পাইকর এলাকায় ভিড় জমে যায়। প্রতিবেশীরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন সোনালিকে। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় আরেক দফা চেক-আপের জন্য। হাসপাতাল সূত্রের দাবি, মা ও শিশুর অবস্থা আপাতত ভাল। সোনালির নিজের কথায়,
“আমি এখন ঠিক আছি। শরীরে বিশেষ অসুবিধা নেই।”

Advertisement

এই দীর্ঘ লড়াইয়ে শুরু থেকেই পাশে ছিলেন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। সোনালির বাড়ি ফেরা নিয়ে তিনি বলেন, “একজন মায়ের লড়াইয়ের জয় হয়েছে। বাকিরাও যাতে দ্রুত ফিরতে পারেন, তার জন্য আমাদের লড়াই চলবে। বাংলাভাষী মানুষকে ভিনরাজ্যে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়ার রাজনীতি আমরা মানি না।”

 

POST A COMMENT
Advertisement