জলপাইগুড়ির নাগরাকাটাতে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। বাঁ চোখের নিচের হাড়ে আঘাত নিয়ে শিলিগুড়ির হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। গত সোমবারের এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। সেদিন ঠিক কী হয়েছিল, হাসপাতালের বেডে শুয়ে জানালেন খগেন মুর্মু।
তাঁর অভিযোগ, ওই এলাকায় যাওয়া মাত্র তৃণমূল কংগ্রেসের লোকজন তাঁদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে শুরু করে। এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। তাঁরা চলেও আসছিলেন। তখনই একদল দুষ্কৃতী আক্রমণ করে। ছোড়া পাথর লাগে তাঁর মুখে। কোনওরকমে তিনি সেই এলাকা থেকে প্রাণ হাতে নিয়ে ফেরেন।
খগেন বলেন, 'আমি খুব একটা বেশি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। আমার শারীরিক অবস্থা মোটেও ভালো নয়। চিকিৎসকরা কম কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন।' তারপরই সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, 'সেদিন যারা আমাদের উপর হামলা করে তারা নিজেদের দিদির লোক বলছিল। ওরা আমাদের ঢুকতে দিচ্ছিল না। বিজেপির নেতারা কেন গিয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলছিল। ওরা প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।'
পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলের খগেন মুর্মু। তাঁর দাবি, পুলিশকর্মীদের সামনেই তাঁকে ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে তাড়া করা হয়। এলোপাথাড়ি পাথর ছুড়তে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। অথচ পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। তাঁর কথায়, 'ওরা আমাদের চলে যেতে বলে। আমরা গাড়ির দিকে আসতে শুরু করি। তখন পাথর ছোড়ে। পাথর আমার মুখে লাগে। ফেটে যায়। গাড়ির জানলার কাচ ভেঙে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় গাড়িতে বসি। কোনওরকমে সেখান থেকে পালিয়ে আসি। পুলিশের সামনেই সব হয়। অথচ পুলিশ দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।'
মঙ্গলবার খগেন মুর্মুকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনও পর্যন্ত অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়নি। তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিজেপি সাংসদ। 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে দেখতে এসেছিলেন। অথচ তখন গ্রেফতারির বিষয়ে কোনও আশ্বাস দেননি। এটা কাম্য নয়।' বলেন তিনি।
এদিকে আজ বুধবার খগেন মুর্মু ও শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার ঘটনায় নাগরাকাটার তৃণমূল সমর্থক গোবিন্দ শর্মাকে আলিপুরদুয়ার থেকে গ্রেফতার করে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ। আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর। বিজেপির তরফে এই ঘটনায় মোট আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।