প্রধান নিখোঁজ। কার্যত অচল পঞ্চায়েত। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে হদিস নেই ফুলকাডাবড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনিমা রায়ের। ফলে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে পঞ্চায়েতের দফতরিক কাজ। নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট হোক কিংবা জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র, সরকারি প্রকল্পের রেজিস্ট্রেশন, সবই আটকে। ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। আশ্বাস দিয়েও সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়ায়, এবার সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব।
বুধবার উপপ্রধান ধরেন্দ্রনাথ রায়কে ঘিরে ক্ষোভ উগরে দিয়ে, পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। দফতরের কর্মীদের আটকে রেখে চলে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ।
সূত্রের খবর, অনিমা রায়ের নামে একটি ওয়ারিশ সার্টিফিকেট জালিয়াতির মামলার তদন্ত চলছে। সেই মামলায় নাম জড়ানোয় তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন বলেই দাবি স্থানীয়দের। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব আগেই এই বিষয়ে স্মারকলিপি জমা দেয় উপপ্রধানের কাছে। প্রধানের নিখোঁজ থাকার কারণ প্রকাশ, রাস্তা সংস্কার, দপ্তরের স্বচ্ছতা সহ একাধিক বিষয়ের দ্রুত সমাধান চেয়ে স্মারকলিপি দেয় তারা। উপপ্রধান ধরেন্দ্রনাথ রায় দাবি করেছিলেন, ১৮ তারিখের মধ্যে সব দাবি খতিয়ে দেখে উত্তর দেওয়া হবে। কিন্তু সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কোনও জবাব না মেলায় ফের ফুঁসে উঠেছে তৃণমূল।
অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি জগবন্ধু রায়ের অভিযোগ, “প্রধান দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ। অথচ প্রশাসনের তরফে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ নেই। সাধারণ মানুষ রোজ সমস্যায় পড়ছেন। তাই আমরা বাধ্য হয়েই তালা দিয়েছি।” অন্যদিকে, উপপ্রধান ধরেন্দ্রনাথ রায় জানিয়েছেন, “প্রধান দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ায় আমি অনেক কাগজে সই করতে পারছি না। সমস্যা সমাধানে পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে বৈঠকের উদ্যোগ নিচ্ছি। দু’দিন সময় চাই।”
বিপাকে সাধারণ মানুষ
এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনে কার্যত বিপাক পড়েছেন সাধারণ মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নীরবতা ও রাজনৈতিক কোন্দলের খেসারত দিতে হচ্ছে তাঁদের। কেউ স্কুলে ভর্তি হতে পারছেন না প্রয়োজনীয় শংসাপত্রের অভাবে, কেউ বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে। স্থানীয় বাসিন্দারাও বিরক্ত ,পরিষেবা বন্ধ হবে কেন? তাঁদের প্রশ্ন। এদিকে, প্রধানের খোঁজে প্রশাসন আদৌ কোনও তৎপরতা দেখাচ্ছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। মেখলিগঞ্জের বিডিও অরিন্দম মণ্ডলকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।