
কোচবিহার বিমানবন্দরের একমাত্র বিমান সংস্থার পরিষেবা বন্ধ হওয়ার খবরে জেলার ব্যবসায়িক মহলে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই সংস্থার পক্ষ থেকে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার কোচবিহার স্টেশনের আধিকারিককে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তারা আর কোনও উড়ান চালাবে না। তবে পরিষেবা হঠাৎ বন্ধের সুনির্দিষ্ট কারণ সংস্থাটি স্পষ্ট করে জানায়নি।
কোচবিহারবাসীর জন্য বিমান পরিষেবা নতুন কিছু নয়। রাজ আমল থেকেই এখানে নিয়মিত বিমান ওঠানামা করত। কিন্তু বাম আমলের শেষদিকে নানা প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত সমস্যার জেরে পরিষেবায় অনিয়ম দেখা দেয়। অবশেষে ১৯৯৫ সালে বিমান পরিষেবাটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পরে একাধিকবার সরকার উদ্যোগ নিলেও তা স্থায়ীভাবে চালু করা যায়নি।
২০১১ সালে রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় ফের উড়ান পরিষেবা শুরু হয়। কিন্তু মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তা অনিয়মিত হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১২ ও ২০১৩ সালে মাঝে মাঝে হেলিকপ্টার ট্রায়াল রান হলেও নিয়মিত পরিষেবা আর চালু হয়নি।
২০১৫ সালে আবারও বিমান ওঠানামা শুরু হয় কোচবিহার বিমানবন্দরে। কিন্তু ২০১৬-র ফেব্রুয়ারিতেই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ নীরবতার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর নিশীথ প্রামাণিকের উদ্যোগে ২০২৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে উড়ান প্রকল্পের আওতায় ৯ আসনের ছোট বিমান পরিষেবা চালু হয়। সেই পরিষেবাই এতদিন ধরে জেলার ব্যবসায়ী ও যাত্রীদের ভরসা ছিল।
এখন সেই পরিষেবাও ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ হতে চলেছে। ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা রীতিমতো চিন্তায়। তাঁদের দাবি, বিমান যোগাযোগ চালু থাকার সময় ব্যবসার গতি বাড়ত, বাইরের ক্রেতা-ব্যবসায়ীরাও সহজে কোচবিহারে আসতে পারতেন। পরিষেবা বন্ধ হলে জেলার অর্থনৈতিক গতিও ধাক্কা খেতে পারে বলেই তাঁদের আশঙ্কা।