scorecardresearch
 

Elephant Attack Madhyamik Student At Jalpaiguri: ছেলের ইলেক্ট্রিকের যন্ত্রপাতিগুলি এখনও ছড়িয়ে, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বাবা

Elephant Attack Madhyamik Student At Jalpaiguri: বাবার সঙ্গে বাইকে পরীক্ষা দিতে বেরিয়েছিল ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দেবে বলে। তা আর হল না। রাস্তায় হাতির হানায় প্রাণ হারাল ১৬ বছরের কিশোর। শোকের ছায়া জলপাইগুড়িতে।

Advertisement
ছেলের ইলেক্ট্রিকের যন্ত্রপাতিগুলি এখনও ছড়িয়ে, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বাবা ছেলের ইলেক্ট্রিকের যন্ত্রপাতিগুলি এখনও ছড়িয়ে, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বাবা
হাইলাইটস
  • মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে পিষে মারল হাতি
  • আইটিআই পড়ার ইচ্ছা পূরণ হল না
  • বাড়িতে ছিটিয়ে রয়েছে ইলেকট্রিকের যন্ত্রপাতি

Elephant Attack Madhyamik Student At Jalpaiguri: ছোট থেকেই ইলেকট্রিক কাজে দারুন নেশা ছিল। কোথাও কিছু না শিখেই ঘরের ফ্যান, পুরনো রেডিও, বাড়ির ফিউজ ঠিক করা, ইলেকট্রিক তার এটার সঙ্গে ওটা জুড়ে মোটর চালু করে দেওয়া, এসব কাজে তার উৎসাহ ছিল বরাবর। নিজেদের ঘরের ছোটখাটো কাজকর্ম নিজেই সারিয়ে নিত সে। আশপাশেরআর পাঁচটা বাড়ি কিংবা আত্মীরাও তাঁর দক্ষতায় ওপর ভরসা রাখতেন। তাই আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশীদের বাড়ির বিদ্যুৎ হঠাৎ নিভে গেলে অথবা ফিউজ উড়ে গেলে ডাক পড়তো তাঁরই।

গরিব ঘরের ছেলে। ইচ্ছা ছিল আইটিআই পড়ে সার্টিফাইড ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়বেন। সেই আশা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে। মাধ্যমিক পাশ করলেই বড় উচ্চশিক্ষা নয়, আইটিআইটিতেই ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে ছিল। কৃষিজীবী পরিবারেরও ইচ্ছে ছিল, নিজে কাজ শিখে ভাল করে পসার করুক। কিন্তু সমস্ত ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটলো মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে আচমকা হাতির হানায় এভাবে বেঘোরে প্রাণ যাবে, সদ্য প্রস্ফুটিত এক কিশোরের তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি বাবা-মা তো বটেই আশপাশের বাসিন্দারাও।

আরও পড়ুনঃ মালদায় ঝুলন্ত দেহ দশম শ্রেণির ছাত্রীর, সুইসাইড নোটে প্রেমিকের নাম

হাতির হানায় নিহত অর্জুন দাসের বাড়িতে তার পড়ার ঘরে এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কিছু অসমাপ্ত কাজের টুকরো টুকরো দৃশ্য। তার, ইলেকট্রিকের যন্ত্রপাতি সহ নানা রকমের জিনিস। পাশে একটি টেবল ফ্যান রাখা রয়েছে। যেটি তাকে কোনও এক আত্মীয় সারাই করতে দিয়েছিলেন। সে জানিয়েছিল, "পরীক্ষা শেষ হলেই এটি সারিয়ে দেবে। এখন তো তেমন গরম পড়েনি, তাই অসুবিধে হবে না।" তার সেই অনুরোধ অবশ্য খুশি মনে মেনে নিয়েছিল সেই আত্মীয়। তখন কে জানত? ফ্যান সারাইয়ের আর সুযোগই পাবে না একরত্তি ছেলে।

ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা কেটে গেছে এখনও বাড়ির বড় ছেলের শোক থেকে বের হতে পারেনি গোটা পাড়া গজলডোবা এলাকার টাকিমারীর অর্জুন দাসের বাবা-মা ঠাকুমা সবাই ঘনঘন মুরছা যাচ্ছেন মায়ের শরীর বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছে কান্নাকাটি করতে করতে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন মা সুমিত্রাদেবীর শরীরের উপর নজর রাখতে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বলেছেন, প্রয়োজন হলে হেলিকপ্টারে কলকাতা উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে এসএসকেএমে রেখে চিকিৎসা করানো হবে। যদিও তার প্রয়োজন হয়নি। এদিকে বাবার অবস্থাও কহতব্য নয়। চোখের সামনে ছেলেকে হাতির হানায় মরতে দেখেছেন। বাঁচাতে পারেননি। শেষ নিঃশ্বাস তাঁর কোলেই ফেলেছে ছেলে। বারবার যেন সেই দৃশ্যই চোখের সামনে ভাসছে।

Advertisement

আরও পড়ুনঃ মর্মান্তিক! মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে হাতি শুঁড়ে তুলে আছাড়, মৃত্যু, দুঃখপ্রকাশ মমতার

বৃহস্পতিবার সকালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের গজলডোবার কাছে মান্তাদাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মহারাজঘাট এলাকায় হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুন দাসের। বাবা বিষ্ণু দাসের সঙ্গে বাইকে বেলাকোবার কেবলপাড়া হাইস্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বৈকুণ্ঠপুর ডিভিশনের মহারাজ ঘাট জঙ্গলের রাস্তায় ওঠার আগেই একটি হাতি আচমকা সামনে চলে আসে। দুজনেই বাইক ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। বিষ্ণুবাবু পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও অর্জুন বাইক থেকে নেমে পালাতে গেলে রাস্তায় পড়ে যায়। হাতি পা দিয়ে তাকে পিষে দিয়ে জঙ্গলে ঢুকে যায়। ততক্ষণে আশপাশের লোকজন তাঁকে তুলে নিয়ে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

 

Advertisement