Siliguri Kumartuli News: রিল-মেকার ও শখের শ্যুটিং পার্টির জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে রেটচার্ট ঝুলিয়ে দিলেন কুমারটুলির মৃৎশিল্পীরা। কাজ করবেন কি! রিং লাইট, ট্রাইপড, ক্যামেরা-ফোন নিয়ে প্রতি দিনই হাজির হচ্ছেন ফোটো ও রিল মেকারের দল। কেউ শাড়ি পরে ধুনুচি নাচছেন, কেউ মাটির প্রতিমার সামনে দাঁড়িয়ে রিল বানাচ্ছেন। কারও আবার কেউ অত্যুৎসাহে অসুরের পা কিংবা সিংহের লেজ ভেঙে দিচ্ছেন। অন্যদিকে রিলমেকারদের তাণ্ডবে কাজের বেলাও বয়ে যাচ্ছে। ভেবেচিন্তে তাঁরা একটা উপায় বের করলেন। আর তাতেই ম্যাজিকের মতো কাজ হচ্ছে। ৮০ শতাংশ রিলমেকার পয়সা দিতে হবে শুনেই মুহূর্তে ধাঁ হয়ে যাচ্ছেন। স্বস্তি ফিরেছে শিল্পীদের মধ্যে।
একাধিক শিল্পী এখন তাঁদের কর্মশালার বাইরে ঝুলিয়ে দিয়েছেন 'রেট চার্ট'। তাতে স্পষ্ট লেখা, ফোটো ১০০ টাকা, ভিডিও ৫০০ টাকা। এক মৃৎশিল্পী রতন পাল সংবাদমাধ্যমকে জানান, “ওরা যেমন কনটেন্ট বানিয়ে টাকা রোজগার করে, আমরাও চাই আমাদের পরিশ্রমের কিছু মূল্য দিতে ওরা। কিন্তু টাকার কথা শুনলেই অনেকে ঘুরে চলে যাচ্ছে। তবু অন্তত শান্তিতে কাজ করা যাচ্ছে।”
রেট চার্ট দেখেই অনেকে থমকে যাচ্ছেন। কেউ মানিব্যাগ খুঁজছেন, কেউ আবার অনুরোধ করছেন, “শুধু একটা ৩০ সেকেন্ডের রিল, কাকু!” কিন্তু শিল্পীরা এবার অনড়। ভিতরে ঢুকেই নিলু পাল বলে উঠলেন, “ফ্রিতে কিছুই হবে না। রেট চার্ট পড়ে তারপর ঢুকুন।”
কেন এই পদক্ষেপ? উত্তরে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন শিল্পীরা। এক মূর্তির দিকে দেখিয়ে নিলু পাল বললেন, “এই প্রতিমা একটা ক্লাবের অর্ডার। ভিডিও করতে গিয়ে একজন হাতটা ভেঙে দিল। আমরা কাজ করছি, সেই সময় আমাদের জোর করে ক্যামেরার সামনে দাঁড় করানো হচ্ছে। সব সইতে হয়। এবার আর নয়।” শুধু রেট ধার্য করাই নয়, সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ছবি তোলা বা ভিডিও করার অনুমতি মিলছে ১৫ মিনিটের জন্য। তার বেশি হলে, বাড়ছে খরচও। ফলে, অধিকাংশই ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ অবশ্য দরকষাকষির চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না।