ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে পাহাড়। পরিস্থিতি আপাতত ঠিক আছে। আর তাই ঘুরতে যেতে আহ্বান জানাচ্ছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন দুর্যোগের পরে বহু পর্যটক আটকে পড়েছিলেন। প্রশাসনের তরফে অন্তত দেড় হাজার পর্যটককে বিপর্যস্ত এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। এখন ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হচ্ছে। অনেক পর্যটকের সঙ্গে তাঁর দেখাও হয়েছে, কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন এখন তিনধারিয়া এবং পাঙ্খাবাড়ি রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। রোহিণীও খুলে দেওয়া হবে। ১৫-২০ দিনের মধ্যে খুলে যাবে। ফলে পর্যটকদের আসতে অসুবিধে হবে না।
পুজোর পর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে যায় উত্তরবঙ্গ। ঘরবাড়ি থেকে রাস্তা সবই ধূলিসাৎ হয়। সরকারি হিসেবে মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। দুর্যোগে মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে আর্থিক ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি একজনকে চাকরি দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই আবহেই উত্তরবঙ্গের বিপর্যয়ের পর দ্বিতীয় দফায় পাহাড় সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ দার্জিলিঙের মহাকাল মন্দিরে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী। সূর্যমুখী ফুল ও দুধ দিয়ে পুজো দেন তিনি। কথা বলেন মন্দিরের পুরোহিত ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে। জনসংযোগের সময় স্থানীয়দের সঙ্গেও সৌজন্য বিনিময় করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী পর্যটকদের বার্তা দেন। পাহাড়ে আসতে অসুবিধা হবে না, জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি এখানে অনেক পর্যটকের সঙ্গে দেখা করেছি। হঠাৎ বন্যার পর পর্যটন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আকস্মিক বন্যার সময়, আমাদের প্রশাসন, ডিএম, এসপি এবং আমরা সবাই মিলে অনেক পর্যটককে সরিয়ে নিয়েছিলাম। এখন যেহেতু দুটি রুটই খুলে দেওয়া হয়েছে, আমরা পর্যটকদের এখানে আসার জন্য অনুরোধ করব।'
প্রসঙ্গত, বিজয়া দশমীর পর ভুটান থেকে নেমে আসা জলে ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয় উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা। দার্জিলিং, মিরিক, নাগরাকাটা, আলিপুরদুয়ারের বহু এলাকা জলের তলায় চলে যায়। রাজ্য প্রশাসন ইতিমধ্যেই উদ্ধার ও পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে মহাকাল মন্দিরে পুজো দেওয়া পর বড় ঘোষণাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দেন, শিলিগুড়িতে তৈরি হবে মহাকাল মন্দির । সেখানে থাকবে সবথেকে বড় শিব ঠাকুর। শুধু তাই নয়, শৈলশহরের মহাকাল মন্দিরে প্রবীণ ও বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ।
পাহাড় সফরের শেষ দিনে শুরু থেকেই জনসংযোগ করছিলেন মমতা । এদিন সকালে রিচমন্ড হিল থেকে হেঁটে বের হন মুখ্যমন্ত্রী । রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পথচলতি সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি । জেনে নেন পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কোনওরকম সমস্যা হয়েছে কি না । এছাড়াও পাহাড়ে কোন কোন জায়গায় পর্যটকরা গিয়েছেন এবং সেখানকার পরিস্থিতি কেমন রয়েছে, সেসব পর্যটকদের থেকে জানেন মুখ্যমন্ত্রী।