Jalpaiguri Crime News Today: জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি ব্লকের শ্রীলঙ্কা এলাকায় রবিবার ভোরে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। পেশায় শ্রমিক মলিন্দ্র রায় ভোরে বাড়ি ফিরে স্ত্রী মৌমিতাকে ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে পাশের ঘরের বেড়া ভেঙে প্রবেশ করেন। সেখানে চোখে পড়ে ছয় মাসের শিশু কন্যা জেবিকা অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে এবং পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রী মৌমিতা রায়। সাথে ছিল একটি ধারালো ছুরি।
দ্রুত তাঁদের জলপাইগুড়ি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক জেবিকাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৌমিতার গলার তিনটি গভীর ক্ষত থাকায় কথা বলার মতো অবস্থায় নেই এবং তাঁকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার তদন্তে পুলিশ, আত্মহত্যা না পরিকল্পিত খুন?
ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জলপাইগুড়ির ডিএসপি (ক্রাইম) শান্তিনাথ পাঁজা জানান, ‘‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।’’ শিশুর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। মলিন্দ্রর পরিবারের দাবি, মৌমিতা নিজের মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে পরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। ঘটনাস্থলে মৌমিতার হাতে একটি ছুরি পাওয়া গেছে। তবে শিশুটির খুন ও মৌমিতার অবস্থার পেছনে মলিন্দ্র ও তার পরিবারের কোনও ভূমিকা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পারিবারিক টানাপোড়েন: পূর্ব থেকেই ছিল দ্বন্দ্ব?
দুই বছর আগে মলিন্দ্র ও মৌমিতার বিয়ে হলেও মলিন্দ্রর বাবা সেই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। তাই তাঁরা কাকা বিমল রায়ের বাড়িতে থাকতেন। ঘটনাকালীন বিমল পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন এবং তিনি কোনো আওয়াজ পাননি বলে জানান।
মৌমিতার বাপের বাড়ির সঙ্গে বিয়ের পর যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু এই ঘটনার খবর পেয়ে শিলিগুড়ি ছুটে যান তাঁর দাদা বিশ্বজিৎ রায়। তাঁর মতে, ‘‘এই ঘটনার পেছনে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাত থাকতে পারে।’’
গ্রামজুড়ে চাঞ্চল্য, তদন্তে জোর দাবি এলাকাবাসীর
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামের মানুষ ভিড় জমান ঘটনাস্থলে। স্থানীয় উপপ্রধান পবিত্র রায় বলেন, “আমরা চাই প্রকৃত সত্য সামনে আসুক এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি হোক।”