গভীর জঙ্গলে পুরনো কেল্লা, উত্তরের এই জঙ্গলের ঠিকানা অনেকেই জানে নাআলিপুরদুয়ারের জনপ্রিয় পর্যটনস্থল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জয়ন্তী নদীর ধারে তৈরি হয়েছিল ‘আই লাভ জয়ন্তী’ লেখা একটি সেলফি পয়েন্ট। অভিযোগ, বন দপ্তরের অনুমতি ছাড়াই সংরক্ষিত বনভূমির মধ্যে ওই নির্মাণ করা হচ্ছিল। সেই কারণেই বুধবার সন্ধ্যায় বন দফতরের কর্মীরা হঠাৎ অভিযান চালিয়ে সেলফি পয়েন্টটি ভেঙে দেন। এরপর ক্ষোভে রেঞ্জ অফিস, সরকারি জয়ন্তী বনবাংলো এবং চেকপোস্টে তালা ঝুলিয়ে দেয় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বলে অভিযোগ।
বন দফতরের দাবি, সংশ্লিষ্ট ধাবা মালিককে ২৪ ঘণ্টার নোটিশ দিয়ে জানান হয়েছিল যে নির্মাণটি বেআইনি। বনাঞ্চলের মধ্যে অনুমতি ছাড়া কোনও স্থাপনা করা যায় না। নোটিশের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও নির্মাণ না সরানোয় দফতর সরাসরি ব্যবস্থা নেয়। এই ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, জয়ন্তীবাসীর আবেগকে উপেক্ষা করে অযথা কড়াকড়ি করছে বন দফতর।
তৃণমূলের একাংশের দাবি, রাজ্যের বহু জায়গায় এ ধরনের সেলফি জোন রয়েছে। সেখানে বাধা দেওয়া হয়নি। তাহলে জয়ন্তীতে কেন অনুমতি দেওয়া হল না? রাজাভাতখাওয়া অঞ্চল তৃণমূলের চেয়ারম্যান গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, একটি বিশেষ মহল ইচ্ছাকৃত ভাবে কঠোর নিয়ম প্রয়োগ করে মুখ্যমন্ত্রীকে বিতর্কে জড়ানোর চেষ্টা করছে। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়ার পাশে তারাই দাঁড়িয়েছে।
আরও এক ধাপ এগিয়ে স্থানীয় তৃণমূল সভাপতি বিজয় শর্মা প্রশ্ন তুলেছেন, বক্সায় যখন ‘আই লাভ বক্সা’ সেলফি পয়েন্ট তৈরি হয়েছে, তখন বন দপ্তর আপত্তি করেনি। সেখানে বৈধ হলে জয়ন্তীর ক্ষেত্রে তা বেআইনি হল কেন? তিনি জানান, বন দফতর আচরণ না বদলালে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে হবে এবং বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও তোলা হবে।
জয়ন্তীর এক হোমস্টে মালিকদের একাংশও অবশ্য সাধারণ একটি সেলফি পয়েন্ট তৈরি নিয়ে বন দফতরের কড়াকড়িতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, রাজ্যের বহু পর্যটন স্থলে সেলফি পয়েন্ট রয়েছে। শুধু জয়ন্তীর ক্ষেত্রে তা অপরাধ বলে গণ্য করা হল কেন, তা তাঁদের বোধগম্য নয়। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের মতে, এই নিয়ে আগামী দিনে এলাকায় আরও উত্তেজনা ছড়াতে পারে।