Baharmapur Toto Driver Murder Case: পুজোয় কেনাকাটার জন্য টাকার দরকার ছিল। অথচ পকেট খালি। টাকা কামাতে জঘন্য উপায় বের করল যুবক। সামান্য ব্যাটারি চুরি করার জন্য টোটোচালককে খুন করা হল। তদন্তে নেমে পুলিশ মূল অভিযুক্ত সুজলকে গ্রেফতার করে। পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে টোটোর ব্যাটারি চুরির সঙ্গে যুক্ত মনিরুজ্জামান এবং জামাত শেখ ও ভ্যানচালক উকিল চৌধুরীকেও।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম আলাইহিন শেখ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর দৌলতবাদের বেণীদাসপুরের বাড়ি থেকে টোটো নিয়ে বের হয় সে। এরপর আর খোঁজ মেলেনি। দৌলতাবাদ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ২৮ তারিখ বহরমপুরে জগন্নাথ ঘাট থেকে একটি টোটো উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু টোটোতে কোনও ব্যাটারি ছিল না। প্রাথমিকভাবে পুলিশের সন্দেহ হয় কেউ বা কারা টোটোর ব্যাটারি চুরি করে পালিয়ে গিয়েছে।
ঘটনা মোড় নেয় এরপরে। বিকেল নাগাদ বহরমপুরের হাতিনগরের কুদবা পুকুর থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। তখনও পর্যন্ত ধোঁয়াশার মধ্যেই ছিল পুলিশ। কিন্তু মৃতের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে পুলিশ জানতে পারে এটি খুনের ঘটনা। মৃতের ছবি সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দেওয়ার পরেই দৌলতাবাদের টোটো চালক আলাইহিন শেখের পরিবারের লোকজন দেহটি শনাক্ত করে।
এরপর শহরের একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। ঠিক যে জায়গা থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছিল, সেই জায়গাতেই ভ্যানে করে পলিথিন জড়ানো একটি বস্তু নিয়ে যাওয়ার ছবি সামনে আসে। আদতের সেই বস্তুটি ছিল টোটোর ব্যাটারি। এরপরই খোঁজ শুরু হয় ভ্যান চালকের। এরপর বহরমপুরের চুয়াপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় সুজল হাজরাকে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর জানে শেষের ঘটনা স্বীকার করে সে। জেরায় ধৃত জানিয়েছে,পুজোর কেনাকাটার জন্য টাকার দরকার ছিল। সেই কারণেই টোটোর ব্যাটারি চুরি ছিল মূল লক্ষ্য। খুনের কোনও পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু খুন না করলে ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। সেই কারণেই বাধ্য হয়ে খুন করে সে।
জেরায় সে আরও জানায়, আর্থিক সমস্যা নিয়ে বাড়িতে অশান্তি করে বেরিয়ে এসে বহরমপুর থেকে টোটোয় চাপে সে। ৬০০ টাকা টোটো ভাড়া দিয়ে বহরমপুরের কুতবাপুকুরে যায় সে। এরপর সেখানেই নির্জন জায়গায় টোটো চালককে খুন করে টোটোর ব্যাটারি নিয়ে চম্পট দেয়। সে সময় তাকে সাহায্য করেছিল পরিচিত এক ভ্যান চালক উকিল চৌধুরী। উকিলের ভ্যানে করেই টোটোর ব্যাটারি নিয়ে পালিয়ে যায় সুজল।এরপর গজধরপাড়ার বাসিন্দা মনিরুজ্জামানের কাছে টোটোর ব্যাটারি বিক্রি করে দশ হাজার টাকায়। সেই টাকা তাকে অনলাইনে ট্রান্সফার করা হয়। যা দিয়ে পুজোর কেনাকাটা করে সে।
রিপোর্টারঃ সব্যসাচী ব্যানার্জি