scorecardresearch
 

Teesta River Problem: তিস্তা ফুঁসছে, দুর্যোগে বিপর্যস্ত ডুয়ার্স, উত্তরবঙ্গে কী অবস্থা?

Teesta River Problem: তিস্তার জলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নতুন করে বন্ধ হয়ে গিয়েছে পেশক রোড। ফলে বন্ধ রয়েছে সরাসরি দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ের মধ্যে যান চলাচল। পাহাড় পথে দুর্যোগ কাটছে না কিছুতেই। বরং বৃষ্টির তীব্রতা এবং ব্যপ্তি যত বাড়ছে, ততই তিস্তাকে নিয়ে ভয় বাড়ছে তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের।

Advertisement
ফুঁসছে তিস্তা, ডুয়ার্সে ঝড়ে বিপর্যয়; উত্তরবঙ্গে দুর্যোগ-আতঙ্ক চলছেই ফুঁসছে তিস্তা, ডুয়ার্সে ঝড়ে বিপর্যয়; উত্তরবঙ্গে দুর্যোগ-আতঙ্ক চলছেই

Teesta River Problem Sikkim North Bengal: টানা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বৃষ্টির পর শুক্রবার সকালে খানিকটা রোদ উঠেছে। যদিও বেলা বাড়তেই ফের মেঘলা উত্তরের আকাশ। দক্ষিণবঙ্গ যখন প্রবল গরমে নাজেহাল, সেখানে উত্তরবঙ্গ টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত। পাহাড় থেকে সমতল এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিতে কোথাও সেতু ধসে গিয়েছে, কোথাও নদী ফুলেফেঁপে উঠছে। আবার কোথাও ধস নেমে রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। পাহাড়ে তিস্তা থেকে মালদায় ফুলহর নদী। মহানন্দা, বালাসন, কালজানি, মুজনাই, করলা, গঙ্গা, লিস, তোর্ষা, ঘিস সহ বহু ছোট-বড় নদীতে জল বেড়েছে। নতুন করে দার্জিলিং-কালিম্পং রাস্তাও বন্ধ হয়েছে। 

১০ নম্বর জাতীয় জাতীয় সড়কের পদে পদে তো বিপদ রয়েইছে, নতুন করে ভয় ধরাচ্ছে তিস্তা (Teesta River)। ইতিমধ্যে  তিস্তাপারের বাসিন্দাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে সরে যেতে হয়েছে বাধ্য হয়ে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে মেল্লির বাসিন্দারা জল উঠতে থাকায় বাড়ি-ঘর ছেড়ে উঠে গিয়েছেন। আশঙ্কিত তিস্তাবাজারের (Teesta Bazar) বাসিন্দারাও। বৃহস্পতিবার এদিকে, ১০ মাইলের তারখোলায় তিস্তায় একটি দেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা।পাশাপাশি প্রচুর গবাদিপশুর দেহও এদিন ভাসতে দেখা গিয়েছে উত্তাল তিস্তায়।

প্রবল বর্ষণ (Heavy Rain) এবং তিস্তার জলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নতুন করে বন্ধ হয়ে গিয়েছে পেশক রোড। ফলে বন্ধ রয়েছে সরাসরি দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ের মধ্যে যান চলাচল। পাহাড় পথে দুর্যোগ কাটছে না কিছুতেই। বরং বৃষ্টির তীব্রতা এবং ব্যপ্তি যত বাড়ছে, ততই তিস্তাকে নিয়ে ভয় বাড়ছে তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের। সিকিমজুড়ে বুধবার-বৃহস্পতিবারও রাতে বৃষ্টি হওয়ায় ফুলেফেঁপে ওঠে তিস্তা। নতুন করে তিস্তার জল উঠে যায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের অনেক জায়গার পাশাপাশি পেশক রোডে। কোথাও একহাঁটু জল, কোথাও তারও বেশি। তবে বেলা বাড়ার পর জল নেমে যায়। তবে যে কোনও সময় রাস্তাটি আবার জলের তলায় চলে যেতে পারে বলে আতঙ্কে  রয়েছেন স্থানীয়রা। সকলেই অস্থায়ীভাবে অন্য জায়গায় ঘর তৈরি করে থাকছেন।

Advertisement

অন্যদিকে এক রাতের মধ্যেই অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ল বালুরঘাটে আত্রেয়ী নদীর জল। এমন পরিস্থিতিতে ভারী বৃষ্টি হলে আরও জল বাড়বে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমনকি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এদিকে আত্রেয়ীর জল বাড়তেই আতঙ্কে ঘুম উড়েছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের৷

এদিন রাতে আধ ঘন্টার ঝড়ে বিপর্যস্ত ডুয়ার্সের চালসার আইভিল চা বাগান।৫০টি শ্রমিক আবাস ভেঙে যায়। বাগানের শ্রমিক নন এমন বাসিন্দাদের ধরলে ক্ষতির সংখ্যা আরও বেশি বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বুধবার গভীর রাতে ঝড় ও বৃষ্টির তাণ্ডব এতটাই ছিল যে বেশকিছু বাড়ির ছাদ উড়ে যায়। ভেঙে গিয়েছে দেওয়াল। তবে কেউ হতাহত হননি।

পাহাড়ে টানা প্রবল বৃষ্টিতে কার্যত ধসে যেতে বসেছে সোনাদার জনপ্রিয় ‘ইন্দ্রাণী ফলস’ (Indreni Falls)। যা পর্যটকদের কাছে রেইনবো ফলস (Rainbow Falls) সংলগ্ন এলাকার পরিকাঠামো। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে এই বাঁশ ও কাঠের সেতুটি পুরো ভেসে গিয়েছে। এমনকি দার্জিলিংগামী মূল রাস্তা থেকে এই ফলস অবধি পৌঁছনোর যে সংকীর্ণ রাস্তাটি রয়েছে সেটার অবস্থাও অত্যন্ত বেহাল। 

উত্তরবঙ্গের ব্যাপক বৃষ্টির ফলে জল বাড়তে শুরু করেছে মালদার ফুলহর নদীতে। আর নদীর জল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীর দক্ষিণ দিকের অসংরক্ষিত এলাকায় শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নদীর অসংরক্ষিত অঞ্চলে থাকা রশিদপুর থেকে গোবরা হাট পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। বুধবার রাত থেকে নদীর জল বাড়তে শুরু করায় স্রোত আরও বেড়ে গিয়েছে। আর এই স্রোতের দাপটে নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। আতঙ্কে নদীর দক্ষিণ পাশে থাকা অসংরক্ষিত অঞ্চলের রশিদপুর, ভাকুরিয়া মীরপাড়া তাঁতি পাড়া সহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দা। রশিদপুরের অনেক কাছে চলে এসেছে নদী। উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু সংবাদমাধ্যমকে জানান, ইতিমধ্যেই দিল্লিতে গঙ্গা এবং ফুলহর নদীর ভাঙন সমস্ত স্থায়ী সমাধান নিয়ে কেন্দ্রীয় সেচ মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান।

Advertisement