তিনদিন ধরে দিব্য়ি মেয়েদের পোশাক পরে, মেয়েদের সঙ্গে ক্লাস করল একটি ছেলে। তাও আবার বেশি বয়সী মেয়েদের সঙ্গে। শেষমেষ ক্লাসের একটি মেয়ের তার আচার-আচরণে সন্দেহ হওয়ায়, শিক্ষিকাদের জানালে, তাঁরা এসে খোঁজখবর করতে গিয়ে চোখ কপালে তাঁদের। ওই ছাত্রীটি আসলে ছাত্রীই নয়, সে একজন ছেলে! বিষয়টি ধরা পড়তেই অবশ্য সব স্বীকার করেছে ওই ছেলেটি। তাকে এভাবে মেয়ে সাজিয়ে নিয়ে আসা ছাত্রীটিও বিব্রত হয়েছে। তবে ওই কিশোর নেহাতই পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন সকলেই। ঘটনাটি আলিপুরদুয়ারের একটি স্কুলের।
খবর পেয়েই অনেক ছাত্রীর উদ্বিগ্ন অভিভাবক-অভিভাবিকারা অনেকেই বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়ে উপস্থিত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রধান শিক্ষিকা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ পৌঁছে ওই ছাত্রকে স্কুলের শিক্ষিকাদের উপস্থিতিতে তার মায়ের হাতে তুলে দেয়।
আলিপুরদুয়ারের জেলা স্কুল পরিদর্শক সংবাদমাধ্য়মকে জানান, আহসানুল করিম জানান, ঘটনাটি উদ্বেগজনক। তবে ওই পড়ুয়া পঞ্চম শ্রেণির হওয়ায় কোনও কড়া মনোভাব নেওয়া হচ্ছে না। হয়েছি। ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ও ছাত্রের উপর নজর রাখা হচ্ছে। ছাত্রটির কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে কি না, সেটাও দেখা হচ্ছে। গার্লস স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকার কথায়, ‘১১ বছর বয়সি কারও মাথায় এমন চিন্তা আসার বিষয়টি বেশ উদ্বেগের। এরপর থেকে ওই পডুয়া যাতে ঠিকমতো পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
ঠিক কী ঘটেছে?
ছাত্রটি নিজেই জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, সে তার এক পাড়াতুতো দিদির সঙ্গে একই স্কুলে পড়াশোনা করত। একসঙ্গেই স্কুলে যেত। দিদি তাকে অত্যন্ত স্নেহ করে। পরে ছাত্রীটি গার্লস স্কুলে ভর্তি হয়ে যায়। ছাত্রীটির সঙ্গে সেও বাড়িতে, ওই দিদির সঙ্গে একই স্কুলে পড়তে যাওয়ার বায়না করে। কিন্তু মেয়েদের স্কুলে ছাত্রকে নেওয়া সম্ভব নয়। এরপর দুজনের দুর্বুদ্ধি খেলে।ছাত্রীটি, তার বোনের ইউনিফর্ম ছাত্রটিকে দেয়। রাস্তায় একটি গাছের আড়ালে ওই পোশাক পরে মেয়েদের মতো সেজে সেভাবেই শনিবার থেকে ক্লাস করা শুরু করেছিল ছাত্রটি। মঙ্গলবার পর্যন্ত কেউ বুঝতে পারেনি। বুধবার অবশ্য ওই কিশোরের আচরণে ক্লাসের এক ছাত্রীর সন্দেহ হয়। সেই শিক্ষিকাদের গিয়ে জানায়। এরপরই ধরা পড়ে সে।
ছাত্রটি জানিয়েছে, দিদি আমাকে খুব ভালবাসে। তাই দিদির সঙ্গে ওর স্কুলে গিয়ে ক্লাস করব বলে খুবই ইচ্ছে ছিল। তাই করে ফেলেছি। ওই দিদিরও দাবি, 'ভাই ওভাবে আবদার করায় ওকে না করতে পারিনি।'