স্বর্ণ-ব্যবসায়ী অপহরণ-খুনের মামলায় রাজগঞ্জের বিডিওর আগাম জামিন খারিজরাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মনের আইনি সুরক্ষা কার্যত ভেঙে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করেন। শুধু তাই নয়, আদালত অত্যন্ত কঠোর ভাষায় নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে অভিযুক্তকে। এই নির্দেশের ফলে বিডিও প্রশান্ত বর্মনের গ্রেফতারি যে এখন সময়ের অপেক্ষা, তা বলাই যায়।
হাইকোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, সল্টলেকের কাছে দত্তাবাদে স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যার অপহরণ ও খুনের মামলায় নাম জড়িয়েছে রাজগঞ্জের এই বিডিওর। এর আগে বারাসত আদালত তাঁকে আগাম জামিন দিলেও, সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট।
পুলিশের অভিযোগ ছিল, জাল নথি পেশ করে নিম্ন আদালত থেকে আগাম জামিন আদায় করেছিলেন অভিযুক্ত। আগের শুনানিতেই হাইকোর্ট প্রশ্ন তোলে, কেস ডায়েরি হাতে থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত জেলা জজ কীভাবে কেবল কৌঁসুলির বক্তব্যের উপর ভরসা করে অভিযুক্তকে জামিন দিলেন?
সোমবারের শুনানিতে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, একজন সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে ওঠা এমন গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে আগাম জামিন দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, তদন্তের স্বার্থে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অভিযুক্তের আদালতের মুখোমুখি হওয়া জরুরি। সেই কারণেই তাঁকে তিন দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একজন কর্মরত বিডিও-র বিরুদ্ধে এমন কড়া আদালতি নির্দেশে প্রশাসনিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রাজগঞ্জ ব্লক জুড়েও এই বিষয় নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিকের নাম এমন মামলায় জড়িয়ে পড়ায় প্রশাসনের ভাবমূর্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এখন নজর রয়েছে আগামী ৭২ ঘণ্টার দিকে। আদালতের নির্দেশ মেনে প্রশান্ত বর্মন আত্মসমর্পণ করেন, না কি এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান। সেদিকেই তাকিয়ে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহল। তবে আইনজ্ঞদের মতে, আপাতত তাঁর আইনি পথ যে অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে, তা স্পষ্ট।