Ramakrishna Mission Silliguri: দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন রামকৃষ্ণ মিশনের (Ramakrishna Mission) শিলিগুড়ি শাখার সন্ন্যাসীরা। তাদের উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পাঁচজন সন্ন্যাসী এবং নিরাপত্তারক্ষীকে আশ্রম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গোটা ঘটনায় শহরজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে। এদিকে ঘটনা নিয়ে ঝাড়গ্রাম থেকে সরব হয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার ও তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
রামকৃষ্ণ মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির সেবক রোডের রামকৃষ্ণ মিশনের শাখা সেবক হাউসে রবিবার মধ্যরাতে তাণ্ডব চালায় একদল দুষ্কৃতী। এরপর নিরাপত্তারক্ষী সহ ৫ জন সন্ন্যাসীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে নিউ জলপাইগুড়ি (NJP) রেলস্টেশনের কাছে আলাদা আলাদা জায়গায় প্রত্যেককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এভাবে নিরীহ সন্ন্যাসীদের উপর হামলায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষজনও। প্রশ্ন উঠছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। শহরের মাঝখান থেকে এভাবে অপহরণে শিউরে উঠেছেন আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা।
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (হেড কোয়ার্টার) তন্ময় সরকার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আইনানুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ অভিযোগ করেন, পুলিশ দ্রুত বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করে দোষীদের শাস্তি না দিলে, বিজেপি এই ইস্যুতে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে। তাঁর অভিযোগ পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। বেছে বেছে ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রমের উপর আঘাত নেমে আসা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী ও শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, এই ঘটনা অকল্পনীয়। তৃণমূলের আমলে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে সাধু-সন্ন্যাসীরাও নিরাপদ নয়। দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা না নিলে মানুষের বিশ্বাস উঠে যাবে প্রশাসনের উপর থেকে। এদিকে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বিষয়টি নিয়ে কোনও রকম প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না বলে জানিয়েছেন। এমন ঘটনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শিলিগুড়ির সেবক রোডের চার মাইলে প্রায় দুই একর জমি সহ একটি ভবন রামকৃষ্ণ মিশনকে দান করেছিলেন এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে সেই জমি নিয়ে মামলা হয়। সেই সম্পত্তি এখন মিশনের হাতে আছে। সেখানে স্কুল তৈরির পরিকল্পনা করেছে মিশন। সেই জমি হাতিয়ে নিতে কোনও চক্রান্ত হতে পারে বলে মনে করছেন শাখার সদস্যরা। সেবক রোডের ওই সম্পত্তির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সম্পাদক স্বামী শিবপ্রেমানন্দ জানিয়েছেন, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা তাঁদের নিরাপত্তাকর্মী ও সন্ন্যাসীদের মারধর করে মোবাইল কেড়ে নেয়। সেখানকার সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট করে দেওয়া হয়। প্রত্যেককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। মুখ খুললে খুন করে ফেলার হুমকিও দিয়েছে দুষ্কৃতীরা বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, "আমরা আতঙ্কিত। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। যথাযথ পদক্ষেপ হোক সেটাই চাই।"