শিলিগুড়িতে পাবের সামনে তরুণীর তাণ্ডব, ‘বয়ফ্রেন্ড' খুঁজে না পেয়ে গাড়ি ভাঙচুর

রীতিমতো তাণ্ডব। প্রথমে রেস্তোরাঁয় ঢুকে উত্তেজিত অবস্থায় চিৎকার শুরু করেন তরুণী। কর্মীরা তাঁকে বাইরে বের করার পর ক্ষোভ আরও বাড়ে। রাস্তায় পড়ে থাকা পাথর তুলেই তিনি সোজা রেস্তোরাঁর কাচে ছুড়ে মারেন। কাচ ভেঙে খানখান। এরপর রাগ ঝড়ে পড়ে পাশের পার্ক করা গাড়িগুলোর ওপর। একের পর এক ঢিল, সামনের, পিছনের কাচ ভেঙে গুঁড়ো করে ফেলেন।

Advertisement
শিলিগুড়িতে পাবের সামনে তরুণীর তাণ্ডব, ‘বয়ফ্রেন্ড' খুঁজে না পেয়ে গাড়ি ভাঙচুরশিলিগুড়িতে পাবের সামনে তরুণীর তাণ্ডব, ‘বয়ফ্রেন্ড' খুঁজে না পেয়ে গাড়ি ভাঙচুর

শিলিগুড়ির ব্যস্ত সেবক রোডের রাত। হঠাৎ সিনেমার মতো দৃশ্য। চকোলেট রঙের জামা, চোখে চশমা, হাতে বোতল আর কাঁধে সাইডব্যাগ। এক তরুণী হঠাৎই ছুটোছুটি শুরু করলেন রেস্তোরাঁর সামনে। মুখে একটাই কথা “আমার বয়ফ্রেন্ড কোথায়?” কে বয়ফ্রেন্ড, কার বয়ফ্রেন্ড বুঝে উঠতে না উঠতেই শুরু তাণ্ডব।

শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটতেই চারদিকে ভিড় জমতে সময় লাগেনি। সবাই ভাবছিলেন তরুণীর প্রেমিক হয়তো কোন বিপদে পড়েছেন। কিন্তু ঘটনার মোড় ঘুরল খুব দ্রুতই। জানা গেল, ওই তরুণীর প্রেমিক আসলে রেস্তোরাঁর ওপরের একটি পাবে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় ব্যস্ত ছিলেন। রাস্তার হুলস্থুল, চিৎকার-চ্যাঁচামেচি, কাচ ভাঙা, সবই নাকি তিনি ওপর থেকে দাঁড়িয়ে দিব্যি উপভোগ করছিলেন!

এদিকে, নীচে তখন রীতিমতো তাণ্ডব। প্রথমে রেস্তোরাঁয় ঢুকে উত্তেজিত অবস্থায় চিৎকার শুরু করেন তরুণী। কর্মীরা তাঁকে বাইরে বের করার পর ক্ষোভ আরও বাড়ে। রাস্তায় পড়ে থাকা পাথর তুলেই তিনি সোজা রেস্তোরাঁর কাচে ছুড়ে মারেন। কাচ ভেঙে খানখান। এরপর রাগ ঝড়ে পড়ে পাশের পার্ক করা গাড়িগুলোর ওপর। একের পর এক ঢিল, সামনের, পিছনের কাচ ভেঙে গুঁড়ো করে ফেলেন।

পথচারীরা কেউ হতভম্ব, কেউ আবার ভিডিও করতে ব্যস্ত। যাকে সামনে পাচ্ছেন, তাকেই সন্দেহ করছেন তরুণী“তোমরাই আমার বয়ফ্রেন্ডকে লুকিয়ে রেখেছ!” কখনও গড়াগড়ি খাচ্ছেন, কখনও কারও জামা ধরে টানাটানি।

খবর পেয়ে পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ি থেকে পুরুষ পুলিশকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন। কিন্তু তাঁদের উপস্থিতিও পরিস্থিতি শান্ত করতে পারেনি। উলটে পুলিশের সঙ্গেই বচসা শুরু করেন তরুণী। অভিযোগ, তাঁদেরও হেনস্তা করেন। অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হন পুরুষ পুলিশকর্মীরা। শেষমেশ ‘রণভঙ্গ’ দিয়ে তাঁরা ফিরে যেতে বাধ্য হন।

প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট পর আসে মহিলা পুলিশ। তাঁরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন এবং তরুণীকে আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যান। এরপরই, যেন নাটকের শেষ দৃশ্য, পাব থেকে ধীরে ধীরে নেমে আসেন সেই ‘বয়ফ্রেন্ড’। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, এতক্ষণ কী করছিলেন? উত্তরে তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। শুধু তড়িঘড়ি এলাকা ছেড়ে চলে যান।

Advertisement

উল্লেখ্য, রাত দশটার পর শহরের রাস্তায় মহিলা পুলিশকর্মী সচরাচর না থাকার অভিযোগ আগেও উঠেছিল। সেই কারণেই বহু সময়ে পুরুষ পুলিশকর্মীরা বেকায়দায় পড়েন এমন মন্তব্য পুলিশেরই একাংশের। শনিবার রাতের এই ঘটনাটি ফের সেই দীর্ঘদিনের সমস্যার দিকে আঙুল উঠছে।
 

POST A COMMENT
Advertisement