মালদার তৃণমূল নেতা বাবলা ওরফে দুলাল সরকার (Babla Sarkar Murder Case) খুনের ঘটনায় এখনও দুই মূল পাণ্ডার খোঁজ পেতে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিল মালদা জেলা পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিতে বা খোঁজ দিতে পারলেই মিলবে মোটা টাকার পুরস্কার। দুই অভিযুক্তের ছবিও প্রকাশ করে তার নীচে পুরষ্কার মূল্য ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে পুলিশ।
এখনও পর্যন্ত তৃণমূল নেতার (TMC leader) নৃশংস খুনে মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্তে নেমে ধৃতদের জেরা করে উঠে এসেছে আরও দুজনের নাম। পুলিশ সূত্রে খবর, পলাতক দুই অভিযুক্তের নাম রোহন ওরফে কৃষ্ণা রজক । বাড়ি মালদারই ঝলঝলিয়া এলাকার রেল কলোনি এলাকায়। অপরজন বাবলু যাদবের বাড়ি মহানন্দা কলোনিতে। তাদের ছবি সহ পরিচয়পত্র প্রকাশ করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজ দিতে পারলে ২ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। এমনকী তথ্য প্রদানকারীর নামও গোপন রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে মালদার পাইপ (Malda) ফ্যাক্টরি মোড়ে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করেন তৃণমূল জেলা সহ সভাপতি বাবলা সরকারকে। ঘটনার দিনই সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে সামি আখতার ও টিংকু ঘোষ নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সামির বাড়ি কাটিহার জেলায়। এরপর হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ শুক্রবার সকালে আবদুল গনি নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। যার বাড়ি বিহারের কাটিহার জেলার সালমারি থানা এলাকায়। এরপর অভিজিৎ ঘোষ ও অমিত রজক ওরফে অরুণ নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। তবে এরা কেউই মূল পাণ্ডা নয়। তাদের ধরতে এখন তৎপর পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দুষ্কৃতীরা গত প্রায় ১০-১৫ দিন ধরেই দুলাল সরকারের গতিবিধির ওপর নজর রাখছিল। আর সেটা থেকেই তারা বুঝে গিয়েছিল যে, সকালে দুলাল সরকার একা থাকেন। সেই সময় তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা, ফ্যাক্টরীর কর্মীরা সঙ্গে থাকেন না। আর সেই কারণে সকালেই হামলার পরিকল্পনা করে তারা। কিন্তু এতদিন ধরে দুষ্কৃতীরা খুনের পরিকল্পনা নিয়ে নজরদারি চালাল, অথচ কেউ সেটা বুঝতে পারল না কেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতির তরজাও। বিরোধীদের একাংশ এতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
দুলালচন্দ্র সরকার ওরফে বাবলা তৃণমূলের মালদা জেলা সহ-সভাপতি তথা ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন দুলাল সরকার। সেই সময় হঠাৎ বাইক চড়ে এসে দুই দুষ্কৃতী তাঁকে তাড়া করে গুলি করে। দোকানে আশ্রয় নিতে গেলে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজে খুনের দৃশ্য ধরা পড়ে। এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেন ও দ্রুত পুলিশকে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।