গত সোমবার, লক্ষ্মীপুজোর দিন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল। অবশেষে এই মামলায় গ্রেফতার শুরু করেছে পুলিশ ঘটনার ৫১ ঘণ্টা পর দুই অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছিল জলপাইগুড়ি পুলিশ। এবার এই ঘটনায় আরও দু'জনকে গ্রেফতার করল জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে দু'জনকে আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ধৃতদের নাম সাহানুর আলম এবং তোফায়েল হোসেন ওরফে মিলন। দু'জনেই নাগরাকাটার খয়েরবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। ওই ঘটনায় এ নিয়ে মোট চারজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত সকলকে আজই জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হবে।
সোমবারের হামলার ঘটনায় ৮ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছিল বিজেপি। তবে ধৃতদের নাম এফআইআরে রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এই মামলায় বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, গত সোমবার নাগরাকাটায় প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ এবং মালদা উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁদেরকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। ইটের আঘাতে আহত হন দুই বিজেপি নেতাই। শুধু তাই নয়, একেবারে রক্তাক্ত পরিস্থিতি হয় বিজেপি সাংসদের। জানা যায়, ইটের আঘাতে তাঁর চোখের নিচে হাড় ভেঙেছে। বর্তমানে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে খগেন মুর্মু চিকিৎসাধীন থাকলেও ছাড়া পেয়েছেন শংকর ঘোষ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় জোর রাজনৈতিক তরজা। ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খগেন মুর্মুকে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
বিজেপি গোটা ঘটনায় আঙুল তুলেছে তৃণমূলের দিকে। অপরদিকে তৃণমূলের দাবি , সাধারণ মানুষই ক্ষুব্ধ হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে এই হামলার নিন্দা জানায় তৃণমূলও। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত খগেন মুর্মুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও, রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকায় এখনই অস্ত্রোপচার করা সম্ভব নয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অন্তত ছয় সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হতে পারে প্রবীণ সাংসদকে। এই ঘটনায় প্রথমে গ্রেফতার করা হয় গোবিন্দ শর্মা এবং একরামুল হক নামে দু'জনকে। জানা যাচ্ছে, এরপরেই গভীর রাতে নাগরাকাটা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় শাহানূর আলম এবং তোফায়েন হোসেনকে। ধৃতরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কি না, সেই বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য দেয়নি পুলিশ।
গ্রেফতারির ঘটনায় অবশ্য বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এরা এফআইআরে নাম থাকা ৮ জনের কেউ নন বলে সন্দেহ বিজেপি সাংসদের। এদিকে তৃণমূলের তরফে দেবাংশু ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ভিডিওতে ওই ঘটনায় অনেকজনকেই দেখা গিয়েছে। পুলিশ তাদের মধ্যেই গ্রেফতার করেছে।