বঙ্গোপসাগরে ঘণীভূত হওয়া নিম্নচাপের দাপটে বাংলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে আগেই পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
হাওয়া অফিসের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর-পশ্চিমে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি ক্রমেই শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসছে স্থলভাগের দিকে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এটির আরও শক্তি বাড়ানোর কথা রয়েছে।
উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও দক্ষিণ ওড়িশা উপকূল হয়ে এই নিম্নচাপ ধীরে ধীরে স্থলভাগে প্রবেশ করবে। এর জেরে অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও বাংলা উপকূলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
নিম্নচাপের প্রভাবে আগামী তিন থেকে চারদিন বাংলার একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সেইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
শনিবার থেকেই নিম্নচাপের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলায়। শনির দুপুরেই মেঘে ঢাকা পড়ে কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী জেলার আকাশ। হঠাৎ বৃষ্টিতে ভেজে তিলোত্তমা।দুপুর বাড়তেই বৃষ্টি নামার ফলে স্বস্তি মেলে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলার মানুষের। তাপমাত্রা পারদও বেশ খানিকটা নেমেছে।
বিবার দুই মেদিনীপুর, দুই চব্বিশ পরগনা ও হাওড়ায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এদিন মোট ১০ জেলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সোমবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব বর্ধমান। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত চলতে পারে বৃষ্টি।
শহর কলকাতাতেও এদিন ভারীর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিক, গতকাল বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের ২ ডিগ্রি বেশি।
আগামী ১২ এবং ১৩ তারিখে রাজ্যের পশ্চিমের জেলা বীরভূম, বাঁকুড়া, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
নিম্নচাপের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে। সে কারণেই পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
শুধুমাত্র দিঘাতেই ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বইবে আগামী কয়েকদিন। নিম্নচাপের জেরে সুন্দরবনের উপকূল এলাকায় বৃষ্টির সঙ্গে বইছে ঝড়ো হাওয়া।
একদিকে নিম্নচাপ এবং অন্যদিকে কোটাল। আর এর জেরেই সমুদ্র উত্তাল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যার প্রভাব উপকূল অঞ্চলে পড়তে পারে। আর সেই কারণে উপকূল এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলেই খবর।
পরিস্থিতি যে খারাপ হতে পারে সেই আঁচ করে ইতিমধ্যেই সেচ দফতরের পক্ষ থেকে বাঁধ মেরামতির কাজ করা হচ্ছে। সাগর ব্লকের মুড়িগঙ্গা নদীর বিভিন্ন জায়গায় বেহাল বাঁধ মেরামতের কাজ চালানো হচ্ছে জোরকদমে।