'ফর্ম ভরব না', বাঁকুড়ার দুই আদিবাসী গ্রামে SIR নিয়ে আপত্তিবাংলায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর প্রক্রিয়া যত এগোচ্ছে, ততই সামনে আসছে নানারকম টানাপোড়েন। কখনও রাজনৈতিক তরজা, কখনও বিএলও-দের ক্ষোভ, কখনও বা মাঠপর্যায়ে সাধারণ মানুষের আপত্তি। এসবের মাঝেই নতুন করে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের রাওতোড়া পঞ্চায়েতের মুচিকাটা ও ভেদুয়াশোল গ্রাম। দুটি গ্রামে মোট ৭৯ জন আদিবাসী ভোটার গণনাপত্র (SIR Form) পূরণে সরাসরি অস্বীকার করেছেন, এবং প্রশাসনের গ্রামে গিয়ে বোঝানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রথমে মুচিকাটার ডুংরিডি পাড়ায় বৈঠক বসায় প্রশাসন। উপস্থিত ছিলেন রানিবাঁধের বিডিও অনীশা যশ, খাতড়ার এসডিপিও অভিষেক যাদব, রানিবাঁধ থানার আইসি রজত চৌধুরী এবং বারিকুল থানার আইসি কৃষ্ণেন্দু ঘোষ। আধিকারিকরা স্পষ্টভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে ভবিষ্যতে সরকারি সুবিধা, পরিচয়পত্র ও নানাবিধ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কিন্তু গ্রামবাসীদের অবস্থান অনড়। তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা ‘মাঝি সরকার’-এর পরিচয়পত্র নিয়েছেন, তাই আর কোনও রাষ্ট্রীয় পরিচয় চান না। এক বাসিন্দার কড়া মন্তব্য, “আমরা দু-নৌকায় পা দিই না। মাঝি সরকারেই নাম লিখিয়েছি। ভারত সরকারের নাগরিকত্ব নেব না।”
মুচিকাটা থেকে কোনো সাড়া না মেলায় আধিকারিকরা যান ভেদুয়াশোলে। সেখানে খোলা জায়গায় বৈঠক শুরু হতেই আরও উত্তেজনা তৈরি হয়। বহু আদিবাসী বাসিন্দা ক্ষোভ উগরে দেন, “কয়েকজন ফর্ম না ভরায় এত মাথাব্যথা কেন? অসুখ হলে আসেন না, ঝড়-জলে ঘর ভাঙলে সাহায্য নেই। আগে যেমন খিদেয় ছিলাম, তেমনই থাকব। এসআইআর করব না।”
দীর্ঘ আলোচনা, বোঝানো, অনুরোধ সব ব্যর্থ। শেষ পর্যন্ত খালি হাতেই ফিরতে হয় প্রশাসন ও পুলিশকে। তবে হাল ছাড়তে নারাজ প্রশাসন। আধিকারিকদের দাবি, “মানুষকে বোঝাতে আরও বার গ্রামে যাওয়া হবে। ভোটার তালিকায় নাম থাকা কেন জরুরি, সে বিষয়ে ধারাবাহিক প্রচার হবে।
রিপোর্টার-নির্ভীক চৌধুরী