অনুব্রত মণ্ডলের ভাইরাল অডিও কাণ্ডের মাঝেই এবার বিস্ফোরক তৃণমূলের সিউড়ি ২ ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম। তাঁর এলাকার অঞ্চল সভাপতি রাজু মুখোপাধ্যায়কে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল বোলপুর থেকে। মঙ্গলবার, ৩ জুন সিউড়ি ২ ব্লকের পুরন্দরপুরে একটি সভামঞ্চ থেকে এমনই বিস্ফোরক দাবি করেন ওই তৃণমূল নেতা। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন,তবে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।
উল্লেখ্য, সিউড়ি ২ ব্লকে অনুব্রত ও কাজল অনুগামীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বেশ কয়েকমাস ধরে। এর আগেও কাজল অনুগামী নুরুল ইসলাম একাধিকবার বোলপুর লবিকে আক্রমণ করেছেন। এমনকি তাঁকে বোলপুর থেকে জেলা পরিষদের সভাধিপতির কাজল শেখের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগও করেছিলেন। তাতেই অনেকে মনে করছেন, তাহলে কি আবারও অনুব্রত মণ্ডলের দিকে আঙুল তুললেন কাজল ঘনিষ্ঠ তৃণমূল ব্লক সভাপতি।
প্রসঙ্গত, অনুব্রতর ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি ৷ অস্বস্তি এড়াতে এ নিয়ে মন্তব্য করছেন না শাসক দলের নেতারা ৷ এমনই আবহে অনুব্রতকে নিয়ে নাম না করে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সিউড়ি ২ ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম ৷ পুরন্দপুরের একটি সভা থেকে দলের এই ব্লক সভাপতি বলেন, "মনে রাখবেন ধর্মের কল বাতাসে নড়ে ৷ আবার বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ হয় ৷ বুদ্ধিনাশ হলেই একটির পর একটি ভুল হতে থাকবে ৷ আর সেটাই হতে চলেছে ৷" এখানেই থেমে যাননি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ৷ তাঁর অভিযোগ, দলের এক নেতাকে হুমকি দিয়েছিলেন অনুব্রত ৷ কারও নাম না-নিয়েই তিনি বলেন, "রাজু মুখোপাধ্যায় (তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি)-কে ফোনে বলা হয়েছিল রাজু সোজা লাইনে আসবি, নাকি জীবনটাকে বিলীন করে দিবি ! রাজু আত্মসমর্পণ করেননি ।"
অনুব্রত 'নেতা সেজে' আছেন। এমনও অভিযোগ করেন নুরুল । তিনি বলেন, "আমাদের ব্লকের সংগঠন এত ভালো, সেখানেও একজন নেতা সেজে আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে পারে জেনে অবাক হয়ে গিয়েছি । বোলপুর যেভাবে তাদের কাছে মাথা নীচু করতে বলেছিল, আমি করিনি ৷ বোলপুর যে অন্যায় কাজটা আমাকে দিয়ে করাতে চেয়েছিল, আমি সেটা করিনি ৷"
প্রসঙ্গত, বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে ফোনে অশ্রাব্য় ভাষায় গালিগালাজ করেন অনুব্রত মণ্ডল। ঘটনায় রাজ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। প্রতিবাদে সরব বিরোধীরা। অনুব্রতকে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৷ এই আবহে বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোনও নেতাই মুখ খোলেননি ৷ এবার সরব হলেন কাজল-অনুগামী হিসেবে পরিচিত দলের ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম।
সাংবাদিক- শান্তনু হাজরা