West Bengal BJP: রাজ্য BJP-র একদা দাপুটে নেতা ভিক্ষে করছেন তারাপীঠে, 'বিব্রত' সুকান্ত কী বলছেন?

এক সময় দাপিয়ে রাজনীতি করেছেন । আজ তিনি বাটি হাতে দুটো টাকার জন্য ভিক্ষা প্রার্থনা করছেন সাধারণ মানুষের কাছে! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। নশ্বর এই পৃথিবীতে টাকা-পয়সা,ক্ষমতা সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী। তাই আজ যে রাজা কাল, সে ফকির! এবার এই বাস্তব সত্যিটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন এককালের এক দাপুটে বিজেপি (BJP) নেতা ইন্দ্রজিৎ সিনহা (Indrajit Sinha) ওরফে বুলেট দা। একসময় প্রভাব-প্রতিপত্তি, টাকা-পয়সা কোনও কিছুরই অভাব ছিল না তাঁর।

Advertisement
রাজ্য BJP-র একদা দাপুটে নেতা ভিক্ষে করছেন তারাপীঠে, 'বিব্রত' সুকান্ত কী বলছেন?বঙ্গ বিজেপির দাপুটে নেতা ভিক্ষে করছেন তারাপীঠে,


এক সময় দাপিয়ে রাজনীতি করেছেন । আজ তিনি বাটি হাতে দুটো টাকার জন্য ভিক্ষা প্রার্থনা করছেন সাধারণ মানুষের কাছে! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি।  নশ্বর এই পৃথিবীতে টাকা-পয়সা,ক্ষমতা সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী। তাই আজ যে রাজা কাল, সে ফকির! এবার এই বাস্তব সত্যিটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন এককালের এক দাপুটে বিজেপি (BJP) নেতা ইন্দ্রজিৎ সিনহা (Indrajit Sinha) ওরফে বুলেট দা। একসময় প্রভাব-প্রতিপত্তি, টাকা-পয়সা কোনও কিছুরই অভাব ছিল না তাঁর।

এক সময় বঙ্গ বিজেপির স্বাস্থ্য পরিষেবা সেলের প্রাক্তন প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন  ইন্দ্রজিৎ সিনহা। প্রসঙ্গত প্রায় দশবছর আগে কংগ্রেস ছেড়ে  ইন্দ্রজিৎ সিনহা ওরফে বুলেট গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। বিজেপি এখন পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধী দল। সেইসময় বিপদে-আপদে রাজ্যের প্রায় সমস্ত সরকারি হাসপাতালে বিজেপি কর্মীদের-সমর্থকদের ভর্তি করিয়ে দেওয়ার কাজ করতেন ইন্দ্রজিৎ সিনহা। তৎকালীন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহার কথা শুনে রাজনীতিতে ঢুকে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিজেপির উপস্থিতি বৃদ্ধির কাজে সেইসময় রাতদিন পরিশ্রম করেন বুলেট। এরপরেই দলের রাজ্য সভাপতি হন দিলীপ ঘোষ। তাঁর আমলে স্বাস্থ্যভবন পর্যন্ত তাঁর নাম-পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে। রাজ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রেরই একদা সেই দাপুটে নেতা এই মুহূর্তে দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছেন প্রায় দুই বছর ধরে। প্রথমে টিউমার ধরা পরে। তারপর জানতে পারেন তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত। 

 

 ইন্দ্রজিৎ সিনহার চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল তো দূরের কথা,তাঁর থাকা-খাওয়ারও কোনও সঠিক ঠিকানা নেই। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে দুমাস যাবৎ তারাপীঠ মহাশ্মশানে ভিক্ষাবৃত্তি করে অন্নের সংস্থান করতে হচ্ছে তাঁকে! গাছতলায় রাত কাটাতে হচ্ছে বিজেপির রাজ্য কমিটির এই প্রাক্তন আমন্ত্রিত সদস্যকে। আজতক বাংলা যোগাযোগ করেছিল  ইন্দ্রজিৎ সিনহার সঙ্গে। তিনি কাঁদো কাঁদো সুরে আক্ষেপের সঙ্গে বলেন,"দলের জন্য একসময় দিনরাত পরিশ্রম করেছি। পার্টির কর্মী-সমর্থকদের যে কোনও রোগে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেওয়া থেকে তাঁদের জন্য সুলভে ওষুধের ব্যবস্থা করে দিয়ে বহু মানুষের আশীর্বাদ পেয়েছি। কিন্তু দলেরই কিছু নেতা আমাকে ইচ্ছকৃতভাবে কলঙ্কিত করার চক্রান্ত করেছিল। পার্টির কর্মসূচি আয়োজন করতে গিয়ে প্রচুর ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই আজ নিজের চিকিৎসা,এমনকী ভরণপোষণের ব্যয়বহনেরও ক্ষমতা নেই আমার। তাই বাটি হাতে মানুষের কাছে ভিক্ষাবৃত্তি করতে হচ্ছে আমাকে।"  ইন্দ্রজিতের কথায়,"পার্টি এখন অনেক বড় হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে প্রধান বিরোধী দল এখন বিজেপি। রয়েছে অনেক এমপি-এমএলএ কিন্তু আমার মতো হারিয়ে যাওয়া সামান্য কর্মীর কথা ওদের কানে পৌঁছয় না। তারাপীঠের কিছু স্থানীয় মানুষের আশ্রয়ে রয়েছি।"

Advertisement

 

বর্তমানে তাঁর দেখাশোনা করছেন তারাপীঠের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। জানা যায় ইন্দ্রজিৎবাবুর বাড়ি কলকাতার বেলেঘাটায়। তাঁর মা -বাবা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। তিনি তাঁর সারাটা জীবন রাজনীতির পিছনে দিয়েছেন। তাই বিয়ে সংসার কিছু করেননি। বর্তমানে তারাপীঠ মহা শ্মশানের মানুষজনই তাঁর সঙ্গী।

এদিকে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর  ফেসবুক পোস্টে ইন্দ্রজিৎ সিনহার ছবি শেয়ার করে বিজেপির রাজ্য সবাপতি সুকান্ত মজুমদার  লিখেছেন, ‘মাননীয় শ্রী ইন্দ্রজিৎ সিনহা মহাশয় ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) পশ্চিমবঙ্গের একজন কর্মঠ এবং পুরনো কর্মী। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে আমার সহকর্মীদের একাধিক পোস্ট থেকে তাঁর বর্তমান করুণ পরিস্থিতির বিষয়টি জানতে পেরেছি।’

 

সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখেছেন, ‘ইতিমধ্যেই বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মাননীয় ধ্রুব সাহা মহাশয়ের সঙ্গে ইন্দ্রজিৎবাবুর বিষয় নিয়ে কথা বলেছি এবং ভারতীয় জনতা পার্টি পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি হিসেবে বীরভূম জেলা নেতৃত্বকে অতি দ্রুত ওনার পাশে দাঁড়িয়ে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করার প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছি। ভারতীয় জনতা পার্টি পশ্চিমবঙ্গ এর পুরো পরিবার ওনার পাশে সর্বদা রয়েছে।’

সংবাদদাতাঃ শান্তনু হাজরা

POST A COMMENT
Advertisement