২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই বিজেপি বিধায়কের বাবা-মায়ের নাম। ফলে বিধায়ক বেআইনি ভোটার। এই অভিযোগ তুলে বিধায়কের নাম বাতিলের দাবিতে এসডিও অফিসে লিখিত অভিযোগ জানাল অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ। ভুতুড়ে ভোটার ধরতে তৎপর নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়ার যে ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, সেই তালিকায় তাঁর মা-বাবার নাম নেই। এমনই অভিযোগ এনে বনগাঁ মহাকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাল অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ।
মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট অশোক কীর্তনীয়ার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ মহকুমা শাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় মতুয়া-মহাসংঘের বনগাঁ শাখার সদস্যরা। তাদের অভিযোগ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বনগাঁ ব্লকের ঘাটবাওর অঞ্চলের ৩৫৪ নম্বর তালিকায় বিধায়কের নাম থাকলেও, তাঁর মা-বাবার নাম সেই তালিকায় নেই। অশোক কীর্তনীয়া বেআইনিভাবে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন। তাঁর বাবা-মায়ের নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে ২০১০ সালের বনগাঁ পৌরসভার গান্ধিপল্লি এলাকায়।
মতুয়া মহাসংঘের বনগাঁ শাখার সম্পাদক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রকাশ করা ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বিজেপির অশোক কীর্তনীয়ার নাম থাকলেও তাঁর মা-বাবার নাম নেই। তারপর অনেক খোঁজাখুঁজির পর ২০১১ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর মা-বাবার নাম আমরা দেখতে পাই। তিনি একজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হয়ে কীভাবে আইনসভার সদস্য হতে পারেন। আমরা জেলাশাসকের কাছে ডেপুটেশন জমা দিয়েছি। অবিলম্বে তাঁর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফার দাবি এবং আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি করছি।
সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া বলেন, 'তাঁর বাবা ১৯৫০ সালে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। তাঁর সমস্ত কাগজপত্র আছে। ১৯৯৩ সালে তাঁর মা-বাবার নাম ভোটার লিস্টে ওঠে। এবার কেন ২০০২ সালে ওঠেনি সেই সময়কার বাম নেতৃত্ব তা জানেন। এই সবই আমাকে বিরক্ত করার পরিকল্পনা। তারা তাদের কাজ করবে। আমি আমার কাজ করব।'
এ বিষয়ে তৃণমূল বনগাঁ সংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, '২০০২ সালের ভোটার তালিকায় অশোক কীর্তনীয়ার নাম আছে, কিন্তু তাঁর মা-বাবার নেই কেন? এই উত্তর অশোক কীর্তনীয়াকে দিতে হবে এবং বিজেপিকে দিতে হবে। এমন ঘটনা প্রথম দেখলাম যে মা-বাবার আগে সন্তান ভোটার হয়ে যাচ্ছে। বিজেপি বাংলায় এনআরসি, সিএএ -এর নামে চক্রান্তের সৃষ্টি করছে।' বিজেপি বনগাঁ সংগঠনিক জেলা সভাপতি বিকাশ ঘোষ বলেন, 'আমরা যতদূর জানি অশোক কীর্তনীয়ার বাবা ১৯৬০ থেকে ৬৫ সালের মধ্যে এদেশে এসেছেন এবং ১৯৯৩ সালে ভোটার কার্ডে তাঁদের নাম ওঠে। যে দলের মুখ্যমন্ত্রী হরিচাঁদ গুরুচাঁদের নামে বাজে বাজে কথা বলেন তাঁরা আবার মতুয়া কবে থেকে হল? এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।'
রিপোর্টারঃ দীপক দেবনাথ