সন্দেশখালিতে ধর্ষণের অভিযোগ করা মহিলার পরিচয় প্রকাশের জন্য পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বিরুদ্ধে চিঠি লিখলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে তিনি এই চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে শিবু হাজরার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা এক মহিলার নাম প্রকাশ করেছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, ওই মহিলার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোডও করা হয়েছে।
চিঠি সুকান্ত লিখেছেন,'পশ্চিমবঙ্গের সন্দেশখালি এলাকায় যে ঘটনাটি ঘটছে তা আপনারা ভাল করেই জানেন। বিভিন্ন নৃশংসতা, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ ওই এলাকার নারীদের। গ্রাউন্ড রিপোর্ট পেতে NCW-এর দল ওই এলাকা পরিদর্শন করেছে। আপনি ওই এলাকায় স্থানীয় পুলিশ এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কার্যকলাপ সম্পর্কে ভাল জানেন। সম্প্রতি, অভিযুক্তদের একজন শিবু হাজরাকে স্থানীয় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। একজন নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ সেই মহিলার অভিযোগ যে ওই এলাকার অপরাধীরা তাঁর বাড়ি ভাংচুর করেছে এবং শিবু হাজরা এবং অন্যদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়ার জন্য তাঁর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এই ঘটনার জন্য একমাত্র দায়ী, কারণ তারা ভিকটিম মেয়েটির পরিচয় প্রকাশ করেছে।'
সুকান্ত আরও লেখেন, 'জবানবন্দি নেওয়ার জন্য নির্যাতিতা মেয়েটিকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিয়ে যায় পুলিশ। তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করার আগে পুলিশ মেয়েটির একটি ছোট ভিডিও রেকর্ড করেছে, যাতে পুলিশ তাঁকে বলতে বাধ্য করে যে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিয়ে গিয়েছে বক্তব্য রেকর্ড করতে এবং সেই ভিডিও অফিসিয়ালে আপলোড করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছে যে কোনও ভিকটিমদের পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না কিন্তু পুলিশ সমাজে ভিকটিমকে হেয় করার এবং সবার সামনে ভিকটিমকে অপমান করার একমাত্র উদ্দেশ্য নিয়ে একই কাজ করেছে। অনেক সাহস সঞ্চয় করার পর ওই এলাকার মহিলারা তাঁদের ওপর ঘটে যাওয়া অপরাধের অভিযোগ করছেন এবং পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করছে, যাতে তাঁরা এগিয়ে না আসেন। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ করে একটি গুরুতর অপরাধ করেছে এবং যা ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা 228A এর অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এখানে পুলিশই অপরাধী এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে সময় নষ্ট হবে। আপনাকে এই বিষয়টি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের দায়িত্বে থাকায় পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং অন্যান্য অফিসারদের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত। তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং তাঁদের গ্রেফতার করতে হবে। অবিলম্বে এই অভিযোগ এবং পদক্ষেপ বিবেচনা করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হচ্ছে।'