
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার থানার পাশে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। সূত্রের খবর, ডায়মন্ড হারবার পোর্টের পিছনে একটি পুকুরপাড়ে প্রায় ২০ কেজি কাঁচা বারুদ লুকিয়ে রাখা ছিল। বুধবার সন্ধ্যা ৭টা বেজে ৪০ মিনিট নাগাদ আচমকাই ওই বারুদের স্তূপে আগুন লেগে যায়। এর ফলে বিকট শব্দে একটি বিস্ফোরণ ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার থানার পক্ষ থেকে ডায়মন্ড হারবার থানা এলাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি থানা চত্বরে যে এলাকায় মজুদ করা হয়েছিল সেই জায়গায় হঠাৎই আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে। নিরাপত্তা জনিত কারণে ডায়মন্ডহারবার শহরের বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় হঠাৎই বিস্ফোরণের কেঁপে ওঠে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে মাধবপুর এলাকায় ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ডায়মন্ড হারবার থানা। বিস্ফোরণের পর গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। এই ঘটনায় হতাহত কোনও খবর পাওয়া যায়নি। আশপাশের ঘরবাড়িগুলিরও কোনও বড় মাপের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ডায়মন্ড হারবার দমকল বিভাগ থেকে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। গোটা এলাকা নিরাপত্তা জনিত কারণে মুড়ে ফেলে ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, বৃষ্টির কারণেই বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে।
ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কিছু বিস্ফোরক পদার্থ, কাঁচা বারুদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সেগুলি থানার মালখানায় না-রেখে পিছন দিকে পুকুরের ধারে রেখে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় আচমকা সেখানে আগুন ধরে যায় এবং প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। কী ভাবে আগুন লাগল তা স্পষ্ট নয় এখনও। ২০ থেকে ২৫ কিলোগ্রাম বাজেয়াপ্ত করা বিস্ফোরক পদার্থ (মূলত কাঁচা বারুদ) থানার পিছনে রাখা হয়েছিল। ডায়মন্ড হারবার থানার আইসি অমরজিৎ বিশ্বাস বলেন, 'বিভিন্ন জায়গা থেকে বিস্ফোরক পদার্থ বাজেয়াপ্ত করে এনে পুকুরপাড়ে রাখা হয়েছিল। বম্ব স্কোয়াড ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় জলের পাশে হঠাৎ করেই বিস্ফোরণ। টানা বৃষ্টি হচ্ছে। তবে বাজ পড়ে এই ঘটনা ঘটেনি। বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কারও আঘাত লাগেনি। থানারও ক্ষতি হয়নি। আশপাশে আরও মশলা রাখা আছে। আমরা দমকলকে খবর দিই। তারা এসে আগুন নিভিয়ে দিয়েছে।' ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার অ্যাডিশনাল সুপার মিতুন দে বলেন, 'সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে একটি বিস্ফোরণ হয়েছে। কারও আঘাত লাগেনি, কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে।'
পরে বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় ডায়মন্ড হারবার থানার তরফে। ঘটনার সত্যতা হিসেবে থানার এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়েছে যে, ডায়মন্ড হারবার থানা থেকে দূরে পুকুর পাড়ে আটক করা কিছু বাজি জমা করে রাখা হয়েছিল। সেখানে সম্ভবত বজ্রপাত থেকে অগ্নিসংযোগ ঘটে। তৎক্ষণাৎ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সম্পূর্ণভাবে নিভিয়ে দেয়। থানার তরফে আরও বলা হয়, এই ঘটনাকে ঘিরে থানায় অগ্নিসংযোগের কথা বলে সম্পূর্ণ ভুল তথ্য সমাজমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে ডায়মন্ড হারবার থানায় এর বিন্দুমাত্র কোনও আঁচ লাগেনি এবং থানার কোনও কর্মচারীর কোনওরকম ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ডায়মণ্ড হারবার থানা বিস্ফোরণে ভস্মিভূত !!!
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) May 28, 2025
ঘটনাস্থল ডায়মণ্ড হারবার থানা। যেটা জানা যাচ্ছে আটক করা বিষ্ফোরক থেকে বিস্ফোরণ ঘটে ডায়মণ্ড হারবার থানা ভয়াবহ আগুনে প্রায় ভস্মিভূত। দমকল আগুন নেভানোর প্রয়াস করছে।
যেমন এলাকা, তেমন থানা, অনুরূপ ঘটনা!
আগামী ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের… pic.twitter.com/ZrWojwgBh4
বিস্ফোরণের ভিডিয়ো পোস্ট করে এক্স মাধ্যমে শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, 'ডায়মন্ড হারবার থানা বিস্ফোরণে ভস্মীভূত। জানা যাচ্ছে আটক করা বিস্ফোরক থেকে বিস্ফোরণ ঘটে। হারবার থানা ভয়াবহ আগুনে প্রায় ভস্মীভূত। দমকল আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে।ট সেই সঙ্গে তিনি আরও লিখেছেন, 'অবৈধ বিস্ফোরক মজুত করা হচ্ছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখার জন্যে দাবি জানাচ্ছি।'