Burdwan News: 'চিকিৎসায় অবহেলা ...', দাবি BJP-র, বর্ধমান দুর্ঘটনা নিয়েও বাঙালি-অবাঙালি তরজা

এবার দুর্ঘটনায় আহতদের নিয়েও বাঙালি ও অবাঙালি তরজা। বিহারি বলে দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় অবহেলা করা হচ্ছে না তো? বর্ধমানে জাতীয় সড়কে পূর্ণার্থীদের বাস দুর্ঘটনার একদিন পর বর্ধমান হাসপাতালে আহতদের দেখতে এসে এমনি আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বিজেপি নেতা তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই।

Advertisement
 'চিকিৎসায় অবহেলা ...', দাবি BJP-র, বর্ধমান দুর্ঘটনা নিয়েও বাঙালি-অবাঙালি তরজাএবার দুর্ঘটনায় আহতদের নিয়েও বাঙালি ও অবাঙালি তরজা

এবার দুর্ঘটনায় আহতদের নিয়েও বাঙালি ও অবাঙালি তরজা। বিহারি বলে দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় অবহেলা করা হচ্ছে না তো? বর্ধমানে জাতীয় সড়কে পূর্ণার্থীদের বাস দুর্ঘটনার একদিন পর বর্ধমান হাসপাতালে আহতদের দেখতে এসে এমনি আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বিজেপি নেতা তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই।  যদিও হাসপাতাল সুপার জানান, অসুস্থদের জন্য রাজ্য সরকার ও হাসপাতালের তরফ থেকে  যথাসাধ্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাঁদের জন্য জমা কাপড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মৃতদেহ পরিবারের হাতে দিয়ে পূর্ব বর্ধমান থেকে বিহারের মতিহার নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এমনকি আহত যাঁদের  অপারেশন প্রয়োজন হচ্ছে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকা সত্ত্বেও বর্ধমান হাসপাতালে তরফ থেকে সমস্ত খরচা বহন করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসের সকালে বর্ধমানে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনার পর আহতদের চিকিৎসা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। পরদিন তিনি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি অভিযোগ তোলেন— 'আহতরা বিহারের বাসিন্দা বলেই তাঁদের প্রতি কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। চিকিৎসা নেই, ওষুধ নেই, এক বেডে দু-তিনজন শুয়ে রয়েছেন। অপারেশন হয়েছে, কারও হাতে-পায়ে প্লাস্টার, কারও ক্যাথিটার লাগানো অবস্থায় রক্তপাত হচ্ছে অথচ সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। মানুষগুলো চিৎকার করছে— ওষুধ নেই, চিকিৎসা হচ্ছে না। ডাক্তার-নার্সদের দেখা যাচ্ছে না। বিহার থেকে পরিবার-পরিজনরা এসে দেখছেন হাসপাতালের এই বেহাল চিত্র। তাঁরা আতঙ্কিত, এখানে আদৌ সুস্থ হবেন তো? না এখানেই মারা যাবেন! দুর্ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও আহতদের ড্রেসিং হয়নি, ব্লিডিং হচ্ছে। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন কি— বাংলা স্বাস্থ্য পরিষেবার কী দশা? আহতরা বিহারি বলেই গুরুত্ব নেই। উন্নত চিকিৎসা নেই, খাবার নেই, জল নেই। অথচ বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই খোঁজ নিয়েছেন। সরকার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে যদি আরও কারও মৃত্যু হয়, তার দায় সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের।'

Advertisement

যদিও হাসপাতাল সুপার ডাঃ তাপস ঘোষ জানান, অসুস্থদের জন্য রাজ্যে সরকার ও হাসপাতালের তরফ থেকে  যথাসাধ্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে যেসব আহত যাত্রী ভর্তি আছেন তাদের খাওয়া-দাওয়া, পোশাক-আশাকের বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে কিছু রোগীর হাতে, গলায় কিংবা কাঁধে হাড় ভাঙার মতো আঘাত রয়েছে, এই অবস্থায় নতুন পোশাক পরানো সম্ভব নয়। কারণ এতে আরও ক্ষতি হতে পারে। তাই আপাতত তাঁদের পুরনো জামাকাপড় পরিয়েই রাখা হয়েছে। সুস্থ হয়ে উঠলেই সেগুলি পরিবর্তন করা হবে।  মৃতদেহ পরিবারের হাতে কফিনের মাধ্যমে পূর্ব বর্ধমান থেকে বিহারের মতিহার নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি আহতদের মধ্যে যাঁদের  অপারেশন প্রয়োজন হচ্ছে তাঁদের  স্বাস্থ্য সাথী কার্ড না থাকা সত্ত্বেও বর্ধমান হাসপাতালের তরফ থেকে সমস্ত খরচা বহন করা হচ্ছে।

এবিষয়ে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, গুরুতর আহত ৬ জনকে এক লাখ টাকা করে, তুলনামূলক কম আহতদের ১৬ জনকে ৫০ হাজার টাকা  করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মৃতদের চারজনের পরিবাকে  দু'লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। বাকিরা বঞ্চিত হচ্ছে বিহার সরকারের উদাসীনতায় । সব মিলিয়ে ২২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। টাকাটা বড় কথা নয়। কে পাশে দাঁড়ালো সেটা বড় কথা। যতটা সম্ভব চিকিৎসার সুযোগ তাঁদের দেওয়া হয়েছে।  প্রশাসনিক আধিকারিকরা বিহার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনও রেসপন্স তেমনভাবে পাওয়া যায়নি বিহার সরকারের তরফ থেকে। আজ পর্যন্ত সেখান থেকে প্রশাসনের কেউ এলো না। টেলিফোন করলেই দায় শেষ। মমতা বন্দ্যোপ্যায় প্রমাণ করে দিলেন শুধু বাংলার মানুষের পাশে নয়, তিনি  গোটা ভারতের মানুষের পাশে আছেন।

রিপোর্টারঃ সুজাতা মেহেরা

POST A COMMENT
Advertisement