কয়েক সপ্তাহ আগেই মন্দারমণিতে ‘অবৈধ’ হোটেল ভাঙার বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেতে হয়েছিল জেলা প্রশাসনকে। এদিকে আজ মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন বা হোটেল মালিকদের সঙ্গে কোনও বৈঠক করবেন কি না তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। এদিকে মন্দারমণিতে অবৈধ হোটেল বা লজ ভাঙা নিয়ে জেলাশাসকের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্ট মঙ্গলবার এক আদেশে জানায়, ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মন্দারমণির ওই ‘অবৈধ’ হোটেলগুলির বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। আগামী ১৭ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ নভেম্বর মন্দারমণির ‘অবৈধ’ হোটেল-লজগুলি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে মন্দারমণির হোটেল মালিকদের সংগঠন উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলে গত ২২ নভেম্বর জেলাশাসকের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই স্থগিতাদেশ বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। এর মাঝে গত ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককে বিশদ রিপোর্ট জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। মঙ্গলবার ওই মামলায় শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিচারপতি অমৃতা সিংহ না-থাকায় শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। আদালত সূত্রে খবর, বিচারপতি অমৃতা সিংহ এখন রয়েছেন পোর্টব্লেয়ার বেঞ্চে। ফলে তাঁর অনুপস্থিতিতে আগামী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মন্দারমণির ‘অবৈধ’ হোটেল ভাঙার বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ না-করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা, কারণ মন্দারমণি এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা হোটেল, লজ, রিসোর্ট এবং হোম স্টে নির্মাণের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ চলছে। সিআরজেড (কোস্টাল রেগুলেটেড জ়োন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি) গত ১১ নভেম্বর মন্দারমণি এবং তার আশেপাশের আরও চারটি মৌজার মধ্যে মোট ১৪৪টি অবৈধ নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল। সিআরজেডের জেলা কমিটির তরফে বলা হয়, এই হোটেলগুলো উপকূলীয় বিধির প্রতি অবহেলা করে গড়ে উঠেছিল এবং তাই এসব নির্মাণ অবৈধ। ২০২২ সালে জাতীয় পরিবেশ আদালতও এই অবৈধ নির্মাণগুলিকে ভাঙার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। এই সমস্ত হোটেলগুলির বিরুদ্ধে যেসব আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছিল, তা সরকারের আইন অনুযায়ী উপকূলীয় এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং পরিবেশ সুরক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না।