মেদিনীপুর বিধানসভার উপনির্বাচন উপলক্ষে প্রচারে গিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। লালদিঘি এলাকায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কার্যত দুষলেন তিনি। হিরণ বলেন, লোকসভায় তো কেন্দ্রীয় সরকার দাঁড় করিয়ে করিয়ে তৃণমূলকে জিতিয়েছে। আপনারা সবাই দেখেছেন, সেন্ট্রাল ফোর্স দাঁড়িয়ে থাকত, আর ওরা আমাদের বুথ দখল করে ভোট করছিল। সেই একই ঘটনা যদি আবার এখানে হয় তাহলে কিছু করার নেই। মানুষ অসহায়। আমরা বিজেপির কার্যকর্তারা অসহায়। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের জেতার পিছনে কার্যত বিজেপিকেই দায়ী করলেন বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা , কেন্দ্রীয় সরকার দাঁড় করিয়ে করিয়ে তৃণমূলকে জিতিয়েছে। আর তাঁর এহেন মন্তব্যে বিপাকে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। বিজেপি বিধায়কের এহেন আচরণে অবাক দল। হঠাৎ এমন কী হল যে কারণে হিরণ এই ধরনের মন্তব্য করলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন দানা বেঁধেছে।
সম্প্রতি হয়ে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল লোকসভার নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন খড়্গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় ৷ কিন্তু বিপুল ব্যাবধানে টিএমসি প্রার্থী দেবের কাছে হেরেছিলেন ৷ কিন্তু ভোটের দিন থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিষ্কৃয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ৷ কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপিকে হারিয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন ৷ শনিবার মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের সময় বিজেপি প্রার্থী শুভজিৎ রায়ের সমর্থনে মেদিনীপুর শহরে প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় সরকারকেই কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় ৷ সংবাদ মাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন।
হিরণ শনিবার দুপুর থেকে মেদিনীপুর শহরের অলিগলিতে ঘুরে বাসিন্দাদের হাতে লিফলেট তুলে দিয়ে বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দিতে আহ্বান জানিয়েছেন ৷ সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল লোকসভা থেকে বিপুল ভোটে হেরেছেন তিন, সংবাদমাধ্যম জিজ্ঞাসা করতেই হিরণের গলা থেকে বেরিয়ে এল ক্ষোভের আগুন ৷ কেন্দ্রীয় বাহিনী, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনতো ছিলোই, সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকেও পক্ষপাতমূলক বলে দাবি করে বসলেন বিজেপি বিধায়ক ৷
তিনি বলেন- ভারতীয় জনতা পার্টিকে জেতাতে হবে। মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার যদি ঠিকঠাক করে ভোটটা করিয়ে নেন , তাহলে এই ভোটে জিততে পারবো। তা না হলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের উপর ভরসা করলে এই ভোট জেতা যাবে না। লোকসভায় তো কেন্দ্রীয় বাহিনী ঠিক করে ভোট করায়নি। লোকসভায়তো কেন্দ্রীয় সরকার দাঁড় করিয়ে করিয়ে তৃণমূলকে জিতিয়েছে। সেন্ট্রাল ফোর্স, সিআরপিএফ, আপনারা সবাই দেখেছেন , সেন্ট্রাল ফোর্স দাঁড়িয়ে থাকতো, আর ওরা আমাদের বুথ দখল করে কী করছিল। আমরা হাইকোর্টে পর্যন্ত গেছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন বলেছে ফরেন্সিক করার জন্য আমরা কোন ক্যামেরা পাঠাতে পারবো না। এটাতে পরিষ্কার দেখা যায় , নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় সরকার দুইয়ে মিলে লোকসভাতে হারিয়েছিল বিজেপিকে। সেই একই ঘটনা যদি আবার এখানে হয় তাহলে কিছু করার নেই। মানুষ অসহায়। আমরা বিজেপির কার্যকর্তারা অসহায়। মানুষ ভোট দিতে চাইছে ভোট দিতে পারছে না ৷
তাঁর এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, কী কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে এমন বললেন হিরণ। অনেকেই মনে করছেন দল বিরোধী কথা বার্তা বলছেন হিরণ চট্টোপাধ্যায় ৷ আবার অনেকেই মনে করেছেন বিভিন্ন কারনে হিরণ হয়তো দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ৷ তবে এই প্রসঙ্গে বিজেপির কোনো নেতা অবশ্য কোনো মন্তব্য করতে চাননি ৷
সংবাদদাতা: শাহজাহান আলি
প্রতিবেদন: বিশাল দাস