আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। এরপর দুর্গাপুরে মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রীর ধর্ষণ নাড়া দিয়েছে। যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। ফের সরকারি হাসপাতালে নিগৃহীত হলেন মহিলা জুনিয়র ডাক্তার। ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কালীপুজোর দিন অর্থাৎ সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালেই মহিলা চিকিৎসককে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে।
অভিযোগ পাওয়ার পরে রাতেই ঘটনাটির তদন্তে নামে পুলিশ। ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা হলেন শেখ বাবু এবং শেখ হাসিবুর। শেখ বাবু উলুবেড়িয়া ট্র্যাফিক পুলিশের হোমগার্ড। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে উলুবেড়িয়ার খড়িয়া ময়নাপুর এলাকার এক প্রসূতি হাসপাতালে ভর্তি হন। সন্ধ্যায় এক জুনিয়র মহিলা চিকিৎসক রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার করতে যান। কিন্তু রোগীর একাধিক সমস্যার কারণে ওই চিকিৎসক যথাযত শারীরিক পরীক্ষা করতে পারেননি। তিনি প্রাথমিক পরীক্ষা করেই ফিরে আসেন। তারপরই ওই প্রসূতির হোমগার্ড আত্মীয় ও তাঁর দুই প্রতিবেশী রোগীর বর্তমান অবস্থার সম্পর্কে জানতে চান। চিকিৎসক সবটা জানাতেই বচসা শুরু হয়। রোগীর আত্মীয়রা সেই সময়ই পরীক্ষা করার দাবি করতে থাকেন। অভিযোগ, সেই সময় হঠাৎই ওই মহিলা চিকিৎসককে হোমগার্ড-সহ তিনজন চড় থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। তাঁরা মহিলা চিকিৎসকের হাতও মুচড়ে দেন বলে অভিযোগ। এমনকী অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। চিকিৎসক হাসপাতালের বাইরে বেরলে তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার হয় বলেও অভিযোগ।
মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগ, ‘ওই প্রসূতির আত্মীয়রা আমার কোনও কথা শোনেননি। উল্টে আমাকে হুমকি দিতে শুরু করেন।’ এর পরেই হাসপাতালের তরফে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। সেই অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই শেখ বাবু এবং শেখ হাসিবুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই মহিলা চিকিৎসক উলুবেড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জানা গিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১২১(১) ধারা (সরকারি কর্মীকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার জন্য স্বেচ্ছায় আঘাত), ১৩২ ধারা (সরকারি কর্মীকে তাঁর দায়িত্ব পালনের সময়ে আক্রমণ), ৭৯ ধারা (নারীর মর্যাদা হানি করে এমন শব্দের ব্যবহার , অঙ্গভঙ্গি বা আচরণ), ৩৫১(২) ধারা (হুমকি দেওয়া), ৩(৫) (একাধিক ব্যক্তির সাধারণ উদ্দেশ্য নিয়ে করা অপরাধ) ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে।